আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত ৬২২, কুনার-নানগারহারে ধ্বংসস্তূপে পরিণত

সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৮:৫৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২২ জনে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) জানিয়েছে, রোববার (৩১ আগস্ট) রাতে স্থানীয় সময় ১১টা ৪৭ মিনিটে দেশটির পূর্বাঞ্চলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে।
ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল জালালাবাদ শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল মাত্র ৮ কিলোমিটার।
ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুনার এবং নানগারহার প্রদেশ। তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুফতি আব্দুল মতিন জানান, কুনারে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬১০ জন এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১,৩০০ জন। সেখানে ধ্বংস হয়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো।
নানগারহার প্রদেশেও ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছে। সেখানে এখন পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫৫ জনে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি।
ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলো অধিকাংশই দুর্গম এবং পাহাড়ি হওয়ায় সড়কপথে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। অনেক এলাকায় ভূমিধস এবং বন্যায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে শুধুমাত্র হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
হেলিকপ্টারে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠানো হয়েছে কুনারে। তারা আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন এবং গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র স্থানান্তর করছেন।
ভূমিকম্পের পর একাধিক পরাঘাত (আফটারশক) অনুভূত হয়েছে, যা আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। নানগারহারের বাসিন্দা তরুণ পোলাদ নুরি জানান, তিনি অন্তত ১৩টি পরাঘাত অনুভব করেছেন। তার ভাষায়, "এত ভয়ানক ভূমিকম্প জীবনে কখনো দেখিনি।"
নানগারহারের বিভিন্ন হাসপাতালে রক্তের সংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা দল বেঁধে রক্তদানে এগিয়ে আসছেন।
উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রম জোরদার করতে তালেবান সরকার আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলোর কাছে জরুরি সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি, প্রদেশ পর্যায়ের স্থানীয় প্রশাসনকে অবিলম্বে ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা শুরু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১২১ বার পড়া হয়েছে