কুষ্টিয়া-৪ আসন: মনোনয়ন বিতর্কে শেখ সাদীর নাম আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে
সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৬:৩৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনকে ঘিরে বিএনপির ভেতরে সমীকরণ জটিল হয়ে উঠেছে।
দলীয় মনোনয়ন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও স্বপ্নবাজ নেতা শেখ সাদী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আসনে প্রার্থী বাছাইতে ভুল সিদ্ধান্ত হলে বিএনপির জন্য চরম চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে।
শেখ সাদী দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ী, সমাজসেবী ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়। স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তিনি তরুণ ভোটারদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা বেশি। প্রথমবার ভোট দিতে আসা বা শিক্ষিত ভোটাররা তার কর্মকাণ্ড এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সৃষ্ট পরিচিতির কারণে তাকে সমর্থন করছেন।
একজন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, তরুণ ভোটাররা এখন নির্বাচনকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তারা এমন প্রার্থী চান যিনি মাঠে সক্রিয় এবং স্থানীয় সমস্যা জানেন। শেখ সাদী সেই প্রার্থীর মধ্যে পড়েন। এছাড়া, স্থানীয় নেতাদের মতে, তার জনপ্রিয়তা কেবল ভোটব্যাংক বৃদ্ধি করতেই সাহায্য করবে না, বরং নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা ও উদ্দীপনা বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
শেখ সাদী কেবল জনপ্রিয় নন, তিনি সংগঠন পরিচালনায়ও সক্রিয়। বিএনপির স্থানীয় শাখাগুলোর মধ্যে মাঠপর্যায়ে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ও কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তাকে একজন শক্তিশালী নেতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। দলীয় একজন নেতা বলেন, মাঠে যিনি সক্রিয়, তাঁর সঙ্গে নেতাকর্মীরা ঘনিষ্ঠ, তিনি সেই প্রার্থী যিনি নির্বাচনে মাঠ থেকে লড়াই করতে পারবেন। শেখ সাদী সেই প্রার্থী।
স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশে শুধুমাত্র নাম বা পরিচিতি যথেষ্ট নয়; মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম ও সংগঠন শক্তি থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দিক থেকে শেখ সাদীর প্রার্থী হওয়া বিএনপির নির্বাচনী কৌশলে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
কুষ্টিয়া-৪ আসনে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র। অতীতের নির্বাচনে জামায়াতের ভোটব্যাংক শক্তিশালী ছিল। এই বিষয়টি মাথায় রেখে বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি বিএনপি দুর্বল বা অপ্রচলিত প্রার্থী মাঠে নামায়, তাহলে আসনটি প্রতিদ্বন্দ্বীদের দিকে ঝুঁকে যেতে পারে। এখানে একজন শক্ত ও জনপ্রিয় প্রার্থী থাকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
এই প্রেক্ষাপটে নেতাকর্মীদের মধ্যে ধারণা, শেখ সাদী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বীকে মোকাবিলা করতে সক্ষম প্রার্থী। তার উপস্থিতি ভোটারদের মনোভাবেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিএনপির স্থানীয় নেতারা জানাচ্ছেন, মনোনয়ন বিষয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া গেলে আসনটি হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কারণে সমর্থকদের মধ্যে চাপে রয়েছে দলীয় নেতৃত্ব।
একজন স্থানীয় নেতা মন্তব্য করেছেন, দলের বিজয় সম্ভব করতে হলে মাঠে একজন গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থী দরকার। শেখ সাদীর ক্ষেত্রে বিভাজন কম এবং নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। এটা জয়ের মূল চাবিকাঠি। তাই দলের ভেতরের এই সমীকরণ মনোনয়ন বোর্ডের দেখা উচিত।
শেখ সাদী কেবল রাজনৈতিক নেতৃত্বে সক্রিয় নন; ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী হিসেবে তার পরিচিতি। বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগে অংশগ্রহণ এবং স্থানীয় সমস্যার সমাধানে ভূমিকা নেওয়ায় তিনি ভোটারদের মধ্যে ইতিবাচক ইমেজ তৈরি করেছেন।
একজন সমাজকর্মী বলেন, এলাকায় তার পরিচিতি কেবল ভোটে প্রভাব ফেলবে না, বরং সামাজিক সমস্যার সমাধানে তার অবদানের কারণে মানুষ তাকে বিশ্বাস করে।
পলিটিক্যাল বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি বিএনপি শক্তিশালী প্রার্থী না দেয়, তাহলে জামায়াতের প্রার্থী সহজেই সুবিধা নিতে পারে। অতীতে এই আসনে জামায়াতের সংগঠন শক্তিশালী ছিল এবং ভোট ব্যাঙ্কও রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় নেতারা মনে করছেন, শেখ সাদীর মতো জনপ্রিয় প্রার্থী দেওয়া হলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীর সুবিধা সীমিত হবে।
কুষ্টিয়া-৪ আসনে বিএনপির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখন সঠিক প্রার্থী নির্বাচন। বিশ্লেষকদের মতে, জয়-পরাজয় নির্ভর করছে- দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্য, মাঠপর্যায়ের সক্রিয় নেতৃত্ব, প্রার্থী জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা।
শেখ সাদীকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে যে সমর্থন ও আলোচনা তৈরি হয়েছে, তা নির্বাচনী ফলাফলের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। দলীয় সিদ্ধান্তই আগামী নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৪ আসনের চূড়ান্ত চিত্র নির্ধারণ করবে।
১৬৫ বার পড়া হয়েছে