কালীগঞ্জে এলজিইডির উন্নয়ন ঢেউ, বদলে যাচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা
শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৯:১২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পরিচালিত ধারাবাহিক উন্নয়ন কার্যক্রমে দ্রুত বদলে যাচ্ছে গ্রামীণ এলাকা।
ভগ্নদশা সড়ক মেরামত ও নতুন অবকাঠামো নির্মাণে দৃশ্যমান অগ্রগতি মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করেছে।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক দীর্ঘদিন ধরে অবহেলার কারণে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছিল। নিয়মিত দুর্ঘটনা ও ভোগান্তিতে নাজেহাল ছিলেন স্থানীয়রা। তবে দায়িত্ব গ্রহণের পর উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ শাহরিয়ার আকাশের তত্ত্বাবধানে চলমান প্রকল্পগুলোতে গতি ফিরেছে- যার ফল এখন উপকারভোগীদের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে শুরু করেছে।
তথ্য অনুযায়ী, আলাইপুর ক্লাব মোড় থেকে চিত্রা নদী পর্যন্ত প্রায় ৯১০ মিটার সড়ক নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। শাহাপুর ঘিঘাটি থেকে বড় ঘিঘাটি পর্যন্ত ৮৯০ মিটার এবং দুলালমুন্ডিয়া বাজার থেকে ছোট শিমলা পর্যন্ত ১ হাজার ৬৩০ মিটার সড়ক উন্নয়নকাজও সম্পন্ন হয়েছে। দীর্ঘদিন অবহেলিত এসব রাস্তা নতুন রূপে ফিরে আসায় স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ দূর হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তত্তিপুর মডার্ণ ব্রিক্স থেকে পুকুরিয়া পর্যন্ত ১ হাজার ৯০ মিটার সড়ক, বারফা–পরানপুর সড়ক এবং তালসার–কাশিপুর পর্যন্ত ২ হাজার ৫৪১ মিটার সড়কের উন্নয়নকাজ শেষ হয়েছে। কৃষিপণ্যের পরিবহনসহ গ্রামীণ অর্থনীতির গতিশীলতায় এসব সড়ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ওয়েস্টার্ন ইকোনমিক করিডোর অ্যান্ড রিজিওনাল এনহ্যান্সমেন্ট প্রোগ্রাম (উইকেয়ার) প্রকল্পের আওতায় সাদিকপুর ত্রিমোহনী থেকে আড়পাড়া বাজার পর্যন্ত ৪ হাজার ২৪৩ মিটার এবং বেথুলি হাই স্কুল থেকে কোলা জিসি পর্যন্ত ৪ হাজার ৭০০ মিটার সড়ক নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। এগুলো সম্পন্ন হলে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ আরও সুদৃঢ় হবে।
একইভাবে রুরাল কানেক্টিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (আরসিআইপি) এর আওতায় কাশিপুর বাজার থেকে বালিয়াডাঙ্গা জিসি পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার মিটার সড়ক নির্মাণ শেষ হয়েছে, যা স্থানীয়দের বহুদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছে।
শুধু সড়ক নয়- প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে আড়পাড়া শিবনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চারতলা ভবন, বেজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু’তলা ভবন এবং মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। এসব প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. সাইফুল ইসলাম জানান, 'আগে এসব সড়ক দিয়ে চলতে খুব কষ্ট হতো। এখন রাস্তা ভালো হওয়ায় বাজারে পণ্য আনা-নেওয়া অনেক সহজ হয়েছে।'
অন্যদিকে স্থানীয় গৃহিণী রহিমা খাতুন বলেন, 'নতুন রাস্তায় এখন স্কুলে বাচ্চাদের নিতে-আসতে কোনো ভোগান্তি নেই।'
উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ শাহরিয়ার আকাশ বলেন, 'মানসম্মত অবকাঠামো নির্মাণই আমাদের মূল লক্ষ্য। নিয়মিত তদারকি করে প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে। কাজগুলো সম্পন্ন হলে এলাকার যোগাযোগব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আসবে।'
১০৩ বার পড়া হয়েছে