মিয়ানমারে ৩ হাজার রাজবন্দি মুক্তি, ৫৫০০ জনের অভিযোগ প্রত্যাহার
বৃহস্পতিবার , ২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১:০৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মিয়ানমারে সামরিক সরকারের নির্দেশনায় ৩ হাজারের বেশি রাজনৈতিক বন্দিকে সাধারণ ক্ষমা প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি, নির্বাচনের আগে আরও ৫৫৮০ জনের বিরুদ্ধে থাকা সকল অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এই তথ্য বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। খবর এপি, নিক্কেই এশিয়া।
জানানো হয়েছে, সেনা সরকারের এই সাধারণ ঘোষণা অনুযায়ী, মিয়ানমারের সাবেক নেত্রী অং সান সু চি-সহ বেশ কিছু নেতাকর্মী এই সাধারণ ক্ষমার আওতায় আসবেন কি না, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। জান্তা সরকারের এই ঘোষণা আসার পর তারা এখনো অজ্ঞাত স্থানে থাকায় সু চির অবস্থান বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এমআরটিভি জানিয়েছে, দেশটির নির্বাচন পরিচালনা সংস্থা, অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও শান্তি কমিশন, এই সাধারণ ক্ষমার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৮৫ জন বন্দিকে দণ্ডবিধির ৫০৫(এ) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে মুক্তি দেওয়া হয়। এই ধারায় মূলত জনসাধারণের মধ্যে অস্থিরতা বা ভয়ের সৃষ্টি, ভুয়া সংবাদ প্রচার, উস্কানিমূলক মন্তব্য বা জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়।
অপরাধের জন্য মূলত তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে এই আইনে। তবে, মুক্তির তারিখ এখনও নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। অতীতের সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি পেতে বেশ কয়েক দিন সময় লেগে যেত বলে জানা গেছে।
প্রকাশিত ঘোষণা অনুযায়ী, ইতোমধ্যে ৭২৪ জন বন্দিকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাদের এই শর্তের মধ্যে রয়েছে, ভবিষ্যতে যদি আবার কোনো অপরাধ করে, তবে আগের সাজা ও নতুন সাজা দুটিই ভোগ করতে হবে।
অপর এক ঘোষণায় জানানো হয়, আরও ৫৫৮০ জন বন্দির মুক্তির জন্য প্রস্তুত। তারা একই ধরনের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি ছিলেন। এই অভিযোগে বিচার চলাকালীন তারা আত্মগোপনে চলে যান। তবে তাদেরও সাধারণ ক্ষমার আওতায় আনা হচ্ছে, এবং তাদের মামলা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হবে না, কারণ বর্তমানে মিয়ানমারে মুক্ত কোনো গণমাধ্যম নেই। এছাড়া, সু চির দলের বেশিরভাগ নেতাকেও গ্রেপ্তার করেছে জান্তা সরকার।
অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার পর্যন্ত সু চিসহ মোট ২২,৭০৮ জন রাজনৈতিক বন্দি আটক ছিলেন। ৮০ বছর বয়সী অং সান সু চি বর্তমানে ২৭ বছর কারাদণ্ড ভোগ করছেন, যা দেশের ইতিহাসে অন্যতম দীর্ঘ রাজনৈতিক কারাদণ্ড।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনা বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর থেকে মিয়ানমারে ব্যাপক প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ শুরু হয়। এর ফলে দেশটি এখন মৃত্যু ও অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে, বহু মানুষ জীবন হারাচ্ছেন, দেশটি ভয়াবহ সশস্ত্র সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
১১৯ বার পড়া হয়েছে