আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন
সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:৪৪ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান দমন-পীড়ন সংক্রান্ত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ ঘোষিত এই রায় প্রকাশের পর বিবিসি, আল–জাজিরা, রয়টার্স, এএফপি, সিএনএন, দ্য গার্ডিয়ানসহ বহু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম খবরটি সরাসরি প্রচার ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে।
বিবিসি ও আল–জাজিরার গুরুত্বারোপ
বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে রায়ের শিরোনাম করেছে “নৃশংসভাবে বিক্ষোভ দমনের মামলায় বাংলাদেশের সাবেক নেতা শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড”। প্রতিবেদনে বলা হয়, তাঁকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ নিয়ে ভারতের ওপর চাপ বাড়লেও বাস্তবে এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ।
আল–জাজিরা তাদের লাইভ কাভারেজে জানায়, গত বছরের ছাত্রনেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে সহিংস দমন-পীড়নের নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে বিচার চলছে। গণ–অভ্যুত্থানে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
রয়টার্স: নির্বাচনপূর্ব গুরুত্বপূর্ণ রায়
রয়টার্স লিখেছে, “শিক্ষার্থীদের ওপর দমন-পীড়নের দায়ে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হাসিনার মৃত্যুদণ্ড”। সংস্থাটি জানায়, কয়েক মাসের বিচারপ্রক্রিয়ার পর দেওয়া এই রায় আগামী জাতীয় নির্বাচনের কয়েক মাস আগে এসে রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ থাকলেও আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণে নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত আপিল না করার কথা জানিয়েছেন শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ।
এএফপি: আদালতে উল্লাস, দেশে ফেরার নির্দেশ মানেননি
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, রায় ঘোষণা করার সময় আদালতকক্ষে উল্লাস ধ্বনি শোনা যায়। সংস্থাটি আরও জানায়, ভারত থেকে দেশে ফেরার আদালতের নির্দেশ শেখ হাসিনা পালন করেননি।
সিএনএন ও দ্য গার্ডিয়ান
সিএনএন তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, গত বছরের ছাত্র বিক্ষোভ সহিংসভাবে দমনের দায়ে শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এ বিক্ষোভের ফলেই তাঁর সরকারের পতন ঘটে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, অনুপস্থিতিতে বিচার চলার পর প্রাণঘাতী দমন-পীড়নের অভিযোগে দেওয়া হয়েছে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ।
ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিক্রিয়া
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস শিরোনামে লিখেছে, 'শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: এখন কী হবে'। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ সালে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনে যেই ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিলেন, সেই ট্রাইব্যুনালই তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিল।
দ্য হিন্দু জানায়, ছাত্র দমন-পীড়নের অভিযোগে দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে এই রায় এসেছে।
পাকিস্তানি গণমাধ্যমও গুরুত্ব দিয়েছে
পাকিস্তানের ডন লিখেছে, গত বছরের ছাত্র আন্দোলনে দমন-পীড়নের নির্দেশের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো। একই সঙ্গে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এই রায় রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছে।
১০৬ বার পড়া হয়েছে