গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৮৫ জন নিহত, বিশ্বনেতাদের নিন্দা

বৃহস্পতিবার , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৫:০৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গাজায় ইসরায়েলের টানা সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে বিশ্বনেতাদের আহ্বান ও জাতিসংঘের নিন্দা সত্ত্বেও।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভোররাত থেকে হামলার মাত্রা আরও তীব্র হয়েছে। এতে নতুন করে নিহত হয়েছেন অন্তত ৮৫ জন ফিলিস্তিনি।
সর্বশেষ হামলাগুলোর মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ ছিল নুসেইরাত শরণার্থী ক্যাম্পে আল-আহলি স্টেডিয়ামে আশ্রয় নেওয়া মানুষের ওপর চালানো বিমান হামলা, যাতে সাত নারী ও দুই শিশুসহ ১২ জন নিহত হন।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে দিচ্ছে। এতে করে হাজার হাজার মানুষ দক্ষিণে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। জাতিসংঘের তদন্ত কমিশনের মতে, ইসরায়েলের এই অভিযান মূলত গাজায় দীর্ঘমেয়াদি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং দখলকৃত পশ্চিম তীর ও নিজ দেশের অভ্যন্তরে ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রাখার কৌশল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ যুদ্ধের ফলে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৫ হাজার ৪১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৭ হাজার ১৬০ জন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ আটকে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘ অধিবেশনে তীব্র প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, “যারা শিশুদের হত্যা করে মানুষকে আতঙ্কিত করে, তারা মানবতার প্রতিনিধি হতে পারে না।”
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারাও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছেন। নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ আইডে জানান, শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ‘নিউইয়র্ক ঘোষণা’-র ভিত্তিতে কূটনৈতিক আলোচনাও চলমান রয়েছে।
মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, “আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই কিছু অগ্রগতি ঘোষিত হতে পারে।” তিনি আরও জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২১ দফা শান্তি পরিকল্পনা ইতোমধ্যে বিশ্বনেতাদের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।
নেতানিয়াহুর অবস্থান ও অভ্যন্তরীণ চাপ
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এ শান্তি উদ্যোগে সাড়া না দিয়ে বরং আগ্রাসন আরও জোরদার করেছেন। এ মাসের শুরুতে হামাস নেতাদের হত্যার নির্দেশ দেন তিনি, এবং ১৮ মার্চ একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি বাতিল করে গাজায় পূর্ণমাত্রার সাহায্য অবরোধ আরোপ করেন।
এ পদক্ষেপের ফলে দুর্ভিক্ষ, অনাহার ও বিপর্যয় বেড়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইতোমধ্যে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে দেশ ছাড়ার আগে তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে শত শত মানুষ তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এ অবস্থায় নেতানিয়াহুর দপ্তর জানায়, তিনি আন্তর্জাতিক মহলের ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব পুনরায় প্রত্যাখ্যান করেছেন।
১১৮ বার পড়া হয়েছে