ফিলিপাইনে দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতা, গ্রেপ্তার ২ শতাধিক

সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১১:০৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় দুর্নীতিবিরোধী এক বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আয়ালা ব্রিজ ও মেনদিওলা এলাকায় চলা এই বিক্ষোভে হঠাৎ করেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে দেওয়া এক বিবৃতিতে আঞ্চলিক পুলিশ জানায়, যদিও দিনের বেশিরভাগ অংশে শান্তিপূর্ণভাবেই প্রতিবাদ চলছিল, কিছু এলাকায় বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়। পুলিশের দাবি, বিক্ষোভকারীরা ইট ছুড়েছে, মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে, দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে।
এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২২৪ জনকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্কও রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ১৩১ জন পুলিশ সদস্য, যাদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
ম্যানিলা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক বার্নাবি লো জানিয়েছেন, সোমবার শহর স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে এবং কারফিউ জারি রয়েছে। এই বিক্ষোভের পেছনে মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে সরকারের বিলিয়ন ডলারের বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ, যা নিয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত চলছে।
যদিও অনেক শান্তিপূর্ণ সমাবেশ গণতন্ত্র স্মৃতিসৌধ এবং ঐতিহাসিক পার্কে অনুষ্ঠিত হয়েছে, কিছু প্রতিবাদকারী ভিন্ন পথে গিয়ে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে। আঞ্চলিক পুলিশের মুখপাত্র মেজর হ্যাজেল আসিলো বলেন, গ্রেপ্তার হওয়াদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। এখনো কেউ সুনির্দিষ্টভাবে জানায়নি যে তারা প্রকৃত বিক্ষোভকারী নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছিল।
ফিলিপিনো জনগণের ক্ষোভ তৈরি হয় মূলত গত জুলাই থেকে, যখন প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র সংসদে দেওয়া ভাষণে বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে দুর্নীতির কথা স্বীকার করেন।
ছাত্রনেত্রী আলথিয়া ত্রিনিদাদ বলেন, “আমরা যখন দরিদ্রতায় ভুগি, ঘরবাড়ি হারাই, আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে, তখন করের টাকায় সরকারি কর্মকর্তারা বিলাসবহুল জীবনযাপন করে, বিদেশ সফরে যায় এবং করপোরেট লেনদেনে সম্পদ গড়ে তোলে— এটা ভাবলেই আমি ব্যথিত হই।”
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে দুর্নীতির কারণে বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে প্রায় ১১৮.৫ বিলিয়ন পেসো (প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতি হয়েছে।
এশিয়ার বিভিন্ন দেশে, যেমন ইন্দোনেশিয়া ও নেপালেও, বর্তমানে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন তীব্র হয়ে উঠেছে।
১২০ বার পড়া হয়েছে