সর্বশেষ

জাতীয়দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান
৫৫ বছরের ইতিহাসে স্মরণীয় দিন আজ : সালাহউদ্দিন আহমেদৰ
এভারকেয়ার হাসপাতাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার
তারেক রহমানের গণসংবর্ধনাস্থলে নেতা–কর্মীদের ঢল
সারাদেশরাউজানে হিন্দু পরিবারে আগুন : ধরিয়ে দিলে আর্থিক পুরস্কার
ভারতে পালানোর সময় যুবলীগ নেতা গ্রেফতার
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক
সিরাজগঞ্জে তীব্র শীত ও কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত
আন্তর্জাতিকবেথলেহেমে বড়দিন উদযাপনে আনন্দ-বিষাদের মিশ্র অনুভূতি
খেলাঅনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের জন্য ইংল্যান্ডের দল ঘোষণা, অধিনায়ক থমাস রিউ
মতামত

বেকার ভাতা ২০২৬ সালের নির্বাচনে দায়িত্বশীল রাষ্ট্র গঠনের মূল কষ্টিপাথর

তৌফিক সুলতান
তৌফিক সুলতান

বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৫:৩২ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
২০২৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দোরগোড়ায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এক অস্বাভাবিক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র প্রভাব এবং অভ্যন্তরীণ রূপান্তরমুখী চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে।

গত বছর গুলোতে বাংলাদেশের শ্রমবাজারে যে সংকট তীব্রতর হয়েছে, তা কোনো একটি দলের সমস্যা নয়; এটি এখন জাতীয় সংকট। ২০২৬ সালের নির্বাচনে তাই বেকারত্ব শুধু একটি ইস্যু নয়, এটি হবে নির্ধারক ইস্যু। আর এই ইস্যুর সমাধান হিসেবে বেকার ভাতা উঠে এসেছে দায়িত্বশীল শাসনের চূড়ান্ত পরীক্ষার বিষয় হিসেবে।

২০২৬-এর বাংলাদেশ - সংখ্যায় বেকারত্বের নির্মম বাস্তবতা
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৫ সালের প্রাক-নির্বাচনী বিশেষ জরিপের তথ্য মোতাবেক, বর্তমানে দেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যার (১৫-৬৪ বছর) মধ্যে প্রকৃত বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৪.৮%-এ, যা সংখ্যায় প্রায় ৩৫ লক্ষ মানুষ। তবে ভয়াবহতার কেন্দ্রবিন্দু হলো যুব বেকারত্ব। ১৮-৩৫ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার ১৫.৭%, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। উচ্চশিক্ষিত বেকারত্বের হার আরও উদ্বেগজনক: স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের মধ্যে ১৯.২% বেকার।

২০২৪-২০২৫ সময়কালের নতুন সংকট:
১.কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব: গ্লোবাল আউটসোর্সিং মার্কেটে এআই টুলসের বিস্তারের ফলে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ৩০% চাকরি হ্রাস।
২.ইউরোপীয় মন্দার প্রভাব: রপ্তানি খাত, বিশেষ করে পোশাক শিল্পে অর্ডার হ্রাসের ফলে ২ লক্ষ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন।
৩.জলবায়ু অভিবাসন: উপকূলীয় জেলাগুলো থেকে রাজধানী ও বিভাগীয় শহরগুলোতে বাস্তুচ্যুত হয়ে আসা তরুণদের কর্মসংস্থান সংকট।
৪.শিক্ষার গুণগত সংকট: বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া ডিগ্রি ও চাকরির বাজারের চাহিদার মধ্যে ক্রমবর্ধমান পার্থক্য।

অদৃশ্য বেকারত্বের মহামারী:
একটিনতুন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে - "ঘরবন্দী শিক্ষিত বেকার"। প্রায় ৫ লক্ষ তরুণ-তরুণী, যাদের বেশিরভাগই নারী, দীর্ঘদিন চাকরির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বাড়িতে বসে আছেন, সরকারি পরিসংখ্যানে যাদের উপস্থিতি নেই। এরা হচ্ছেন আমাদের অদৃশ্য অর্থনৈতিক বিপর্যয়।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২৫ সালে প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য ও শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, জানা যায় বাংলাদেশের বর্তমান বেকারত্ব পরিস্থিতি নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
বেকারত্বের হার: ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ বাংলাদেশের বেকারত্বের হার বেড়ে ৩.৬৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ । বিবিএস-এর তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের মে মাস নাগাদ ত্রৈমাসিক হিসেবে এই হার আরও বেড়ে ৪.৬৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
বেকারের সংখ্যা: বর্তমানে দেশে মোট বেকারের সংখ্যা প্রায় ২৬.২ লাখ থেকে ২৭.৩ লাখ । এক বছরের ব্যবধানে বেকার মানুষের সংখ্যা প্রায় ১.৬ থেকে ১.৭ লাখ বেড়েছে।
শিক্ষিত ও যুব বেকারত্ব: বেকারত্বের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ছে শিক্ষিত যুবকদের ওপর। মোট বেকারের বড় একটি অংশ শিক্ষিত; যার মধ্যে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী যুবকদের বেকারত্বের হার প্রায় ১১.৪৬ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের স্নাতক সম্পন্নকারীদের মধ্যে বেকারত্বের হার প্রায় ২৯ শতাংশ, যা কর্মসংস্থানের সাথে শিক্ষার অসামঞ্জস্য নির্দেশ করে ।
লিঙ্গভেদে বেকারত্ব: পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে বেকারত্বের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। নারীদের বেকারত্বের হার বেড়ে ৭.১৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যেখানে পুরুষদের ক্ষেত্রে এই হার ৩.৮১ শতাংশ।
শহর ও গ্রাম: শহর অঞ্চলে বেকারত্বের হার (৪.৪০%) গ্রামীণ এলাকার (৩.৪০%) তুলনায় বেশি।
ভবিষ্যৎ পূর্বাভাস: ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ বেকারত্বের হার ৫.০০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সতর্কতা: বিবিএস-এর সংজ্ঞা অনুযায়ী, সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করলেই তাকে বেকার হিসেবে গণ্য করা হয় না। তবে বাস্তবে এই সংজ্ঞা কর্মসংস্থানের প্রকৃত সংকট বা "লুকানো বেকারত্ব" (Hidden Unemployment) পুরোপুরি প্রকাশ করে না বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন ।

বেকার ভাতা - আন্তর্জাতিক সাফল্যের বাংলাদেশী রূপায়ণের সম্ভাবনা

বিশ্বের সফল মডেলগুলোর শিক্ষা:
১.জার্মানির "Kurzarbeitergeld" - অংশকালীন বেকারত্ব ভাতা ব্যবস্থা, যা কোভিড মহামারীর সময় ২০ লক্ষ চাকরি রক্ষা করেছে।
২.দক্ষিণ কোরিয়ার "Youth Hope Allowance" - ১৮-৩৪ বছর বয়সী বেকারদের জন্য মাসিক ভাতা + বাধ্যতামূলক কারিগরি প্রশিক্ষণ।
৩.ভারতের মহারাষ্ট্র মডেল - ২০২৩ সালে চালু হওয়া "Yuva Sathi" প্রকল্প, যেখানে বেকার স্নাতকরা মাসিক ৩,৫০০ রুপি ভাতা পান ১২ মাসের জন্য।
৪.নরওয়ের "Active Labor Market Policies" - বেকার ভাতার সাথে কর্মসংস্থান পরিষেবার সমন্বয়, যার সফলতার হার ৭৮%।

বাংলাদেশের জন্য কাস্টমাইজড মডেল:
২০২৬ সালের প্রেক্ষাপটেবাংলাদেশের জন্য বেকার ভাতা হতে হবে:

· ভৌগলিকভাবে সংবেদনশীল: ঢাকা-চট্টগ্রামের চাহিদা ও কুড়িগ্রাম-পটুয়াখালীর চাহিদা এক নয়।
· শিক্ষা স্তরভিত্তিক: এসএসসি পাস, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের জন্য আলাদা কাঠামো।
· লৈঙ্গিক সংবেদনশীল: নারী বেকারত্ব মোকাবিলায় বিশেষ পদক্ষেপ।
· প্রযুক্তি নির্ভর কিন্তু মানবিক: সম্পূর্ণ ডিজিটাল কিন্তু স্থানীয় ভাষা ও প্রেক্ষাপটে উপযোগী।

২০২৬-এর নির্বাচনী অঙ্গীকার বনাম বাস্তবায়ন সম্ভাবনা:
২০২৬ সালের নির্বাচনে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ইশতেহারে বেকারত্বের সমাধান নিয়ে কী প্রস্তাব দিচ্ছে, তার উপর নির্ভর করবে তাদের দায়িত্বশীলতার মাত্রা।

দায়িত্বশীল রাজনৈতিক অঙ্গীকারের বৈশিষ্ট্য:
১.পরিমাপযোগ্য লক্ষ্য: শুধু "বেকার ভাতা দেব" নয়, বরং "প্রথম বছর ৫ লক্ষ তরুণকে মাসিক ৪,০০০ টাকা ভাতা দেব, যা পরবর্তী বছরে ১৫ লক্ষে উন্নীত করা হবে"।
২.অর্থায়নের উৎসের স্পষ্টতা: টাকার উৎস ব্যাখ্যা করা - রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, সামাজিক সুরক্ষা বাজেট পুনর্বিন্যাস, বৈদেশিক সহায়তা, বিশেষ তহবিল ইত্যাদি।
৩.সময়সীমা ও পর্যায়: ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা, ১ বছরের রোডম্যাপ, ৫ বছরের কৌশল পরিকল্পনা।
৪.স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা কাঠামো: ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম, নাগরিক অভিযোগ নিষ্পত্তি পদ্ধতি, ত্রৈমাসিক পাবলিক রিপোর্ট।
৫.দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থান কৌশলের সাথে সংযোগ: ভাতা শুধু নয়, ভাতার পর কী - সেই পরিকল্পনা।

বেকার ভাতার বহুমাত্রিক অর্থনৈতিক প্রভাব বিশ্লেষণ

স্বল্পমেয়াদে (১-২ বছর):

· বেকার তরুণদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে, যা স্থানীয় বাজারে চাহিদা তৈরি করবে
· ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার জন্য নতুন বাজার সৃষ্টি হবে
· সামাজিক অস্থিরতা ও অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পাবে
· মানসিক স্বাস্থ্য সংকট কমবে

মধ্যমেয়াদে (৩-৫ বছর):

· দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে শ্রম উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে
· নতুন উদ্যোক্তা তৈরির হার বাড়বে
· বৈদেশিক রেমিটেন্স নির্ভরতা কিছুটা হ্রাস পাবে
· জিডিপি বৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব (অর্থনীতিবিদদের প্রক্ষেপণ: জিডিপি বৃদ্ধিতে ০.৫-১% অতিরিক্ত অবদান)

দীর্ঘমেয়াদে (৫+ বছর):

· জনসংখ্যাগত লভ্যাংশের সদ্ব্যবহার
· টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ত্বরান্বিত প্রক্রিয়া
· মধ্যম আয়ের ফাঁদ অতিক্রমে সহায়তা
· জলবায়ু স্থিতিস্থাপক অর্থনীতি গঠনে অবদান

বাস্তবায়ন কাঠামো - প্রযুক্তি ও প্রশাসনিক সংস্কারের সমন্বয়

জাতীয় বেকার ভাতা কর্তৃপক্ষ গঠন:

· একটি স্বাধীন, প্রযুক্তিনির্ভর সংস্থা
· সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন
· বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শাখা
· বেসরকারি খাত, একাডেমিয়া ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিত্ব

প্রযুক্তি অবকাঠামো:
১.বেকার ভাতা ড্যাশবোর্ড: রিয়েল-টাইম মনিটরিং সিস্টেম
২.ব্লকচেইন ভেরিফিকেশন: দুর্নীতি রোধ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ
৩.এআই-চালিত ম্যাচিং সিস্টেম: বেকারদের দক্ষতা এবং চাকরির সুযোগের মধ্যে মিল তৈরি
৪.মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন: ভাতা আবেদন, প্রশিক্ষণ নিয়োগ, চাকরি বিজ্ঞপ্তি

প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন প্ল্যাটফর্ম:

· ডিজিটাল স্কিল ল্যাব: প্রতিটি উপজেলায়
· ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ট্রেনিং: উচ্চপ্রযুক্তি দক্ষতা উন্নয়ন
· শিল্প-শিক্ষা অংশীদারিত্ব: কোম্পানিগুলোর সাথে সরাসরি প্রশিক্ষণ চুক্তি
· গ্রিন জবস একাডেমি: জলবায়ু বান্ধব কর্মসংস্থানের প্রশিক্ষণ

অর্থায়ন মডেল - বহুস্তরীয় ও টেকসই কৌশল

২০২৬-২০৩০ সময়কালের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট কাঠামো:
বছর লক্ষ্য বেকার সংখ্যা মাসিক ভাতা (টাকা) বার্ষিক ব্যয় (কোটি টাকা) অর্থায়নের উৎস
২০২৬ ৫,০০,০০০ ৪,০০০ ২,৪০০ রাজস্ব বাজেট থেকে ৬০%, বৈদেশিক সহায়তা ৪০%
২০২৭ ১২,০০,০০০ ৪,৫০০ ৬,৪৮০ বিশেষ সিকিউরিটিজ বন্ড ৪০%, কর রাজস্ব ৬০%
২০২৮ ২০,০০,০০০ ৫,০০০ ১২,০০০ ডিজিটাল সার্ভিস ট্যাক্স ৩০%, পেনশন তহবিল পুনর্বিন্যাস ৩০%, রাজস্ব ৪০%
২০২৯ ২৫,০০,০০০ ৫,৫০০ ১৬,৫০০ বেসরকারি খাতের অংশীদারিত্ব ২০%, গ্রিন ফান্ড ২০%, রাজস্ব ৬০%
২০৩০ ৩০,০০,০০০ ৬,০০০ ২১,৬০০ টেকসই তহবিল কাঠামো স্থাপন

নতুন অর্থায়ন উৎস সৃষ্টি:
১.ডিজিটাল সার্ভিস ট্যাক্স: ফেসবুক, গুগল, অ্যামাজনের মতো বহুজাতিক কোম্পানির বাংলাদেশি বাজারে আয়ের উপর বিশেষ কর।
২.সামাজিক বন্ড: বেকার ভাতা তহবিলের জন্য বিশেষ সরকারি বন্ড।
৩.ক্লাইমেট ফাইন্যান্স: জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন তহবিলের একটি অংশ বেকারত্ব দূরীকরণে ব্যবহার।
৪.ডায়াস্পোরা বন্ড: প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষ বন্ড।

বিশেষ চ্যালেঞ্জ ও নীতিগত সমাধান

১. নারী বেকারত্ব:
সমাধান:

· নারীদের জন্য ভাতার হার ২০% বেশি
· ঘরে বসে কাজের সুযোগ তৈরির জন্য বিশেষ প্ল্যাটফর্ম
· শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র সহ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

২. প্রতিবন্ধী তরুণদের অংশগ্রহণ:
সমাধান:

· অ্যাক্সেসিবিলিটি মান নিশ্চিতকরণ
· বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম
· কোটা ব্যবস্থা

৩. গ্রামীণ-শহুরে বৈষম্য:
সমাধান:

· গ্রামীণ এলাকায় ভাতার হার বেশি
· স্থানীয় অর্থনীতির সাথে সংগতিপূর্ণ প্রশিক্ষণ
· গ্রামীণ উদ্যোক্তা তৈরিতে বিশেষ সুবিধা

৪. অনানুষ্ঠানিক খাতের অন্তর্ভুক্তি:
সমাধান:

· সরলীকৃত নিবন্ধন প্রক্রিয়া
· মোবাইল ফিন্যান্স ভিত্তিক ভাতা প্রদান
· সামাজিক সুরক্ষার সাথে সংযোগ

রাজনৈতিক দলগুলোর করণীয় - ২০২৬ নির্বাচন বিশেষ
নির্বাচনী ইশতেহারে যা থাকতে হবে:
১.সম্পূর্ণ খসড়া নীতিনির্ধারণী কাগজ বেকার ভাতা নিয়ে
২.অর্থনৈতিক মডেলিং রিপোর্ট অর্থায়ন ও প্রভাব বিশ্লেষণ সহ
৩.প্রযুক্তিগত বাস্তবায়ন পরিকল্পনা
৪.স্বাধীন মূল্যায়ন ও মনিটরিং কাঠামো
৫.অন্তর্বর্তীকালীন বাস্তবায়ন কাঠামো (নির্বাচনের পর প্রথম ১০০ দিন)

জনগণের জবাবদিহিতা কাঠামো:
১.নির্বাচনী বিতর্কে বেকার ভাতা বাধ্যতামূলক আলোচ্য বিষয়
২.ত্রৈমাসিক অগ্রগতি রিপোর্ট প্রকাশ
৩.নাগরিক পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন
৪.সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম লাইভ প্রশ্নোত্তর নিয়মিত

২০২৬-এর পর - ভবিষ্যৎ রূপকল্প:
যদি ২০২৬ সালের নির্বাচনে একটি দায়িত্বশীল সরকার বেকার ভাতা চালু করতে পারে, তবে ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা দেখতে পাব:
১. বেকারত্বের হার ১৫.৭% থেকে ৮%-এ নেমে আসবে
২.যুব উদ্যোক্তার সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি পাবে
৩.অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে শ্রমিক স্থানান্তর বৃদ্ধি পাবে
৪.বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার দক্ষতা উন্নয়নে রোল মডেল
৫.রেমিটেন্স নির্ভরতা ১০% কমবে স্থানীয় কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে

২০২৬ - দায়িত্বের নির্বাচন:
২০২৬ সালের নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য একটি ক্রিটিকাল টার্নিং পয়েন্ট। এই নির্বাচন কেবল সরকার পরিবর্তনের বিষয় নয়, এটি রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতার নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণের বিষয়। বেকার ভাতা কোনো দলের কারসাজি বা নির্বাচনী কৌশল হওয়া উচিত নয়; এটি হওয়া উচিত জাতীয় পুনর্মিলনের চুক্তি।

যে রাজনৈতিক শক্তি ২০২৬ সালে এই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত, যে দল শুধু মুখে নয়, কাগজে-কলমে, প্রযুক্তিতে, অর্থায়নে এবং মননে বেকার তরুণদের জন্য একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে আসবে - সেই দলই হবে বাংলাদেশের জন্য সত্যিকারের দায়িত্বশীল সরকার।

২০২৬ সালের ভোট তাই হবে বেকার ভাতার পক্ষে বা বিপক্ষে নয়; এটি হবে দায়িত্বশীলতা বনাম অবহেলা, ভবিষ্যৎ বান্ধবতা বনাম গতানুগতিকতা, তরুণদের প্রতি শ্রদ্ধা বনাম উপেক্ষা - এই মৌলিক পছন্দের ভোট।

বাংলাদেশের তরুণরা আর শুধু ভোটার নন; তারা এখন নীতিনির্ধারক। ২০২৬ সালের নির্বাচন তারই প্রথম বহিঃপ্রকাশ।

তৌফিক সুলতান, প্রভাষক - ব্রেভ জুবিলেন্ট স্কলার্স অফ মনোহরদী মডেল কলেজ, (বি জে এস এম মডেল কলেজ) মনোহরদী, নরসিংদী।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ওয়েল্ফশন মানবকল্যাণ সংঘ, কাপাসিয়া, গাজীপুর।

১২৩ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন














সর্বশেষ সব খবর
মতামত নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন