চুরির অভিযুক্তকে ‘নির্দোষ’ দেখানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৭:০৮ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
নাটোর শহরের আলাইপুরে মোবাইলের পাইকারি বিক্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৪৮ লাখ টাকার পণ্য ও নগদ টাকা চুরির মামলায় অভিযুক্তদের ‘নির্দোষ’ প্রমাণের চেষ্টা চলছে-এমন অভিযোগ তুলেছেন মামলার বাদী পাবনার ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান টিপু।
তিনি দাবি করেছেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা সঠিকভাবে তদন্ত না করেই আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করেছেন।
জানা যায়, আলাইপুরের আব্দুল্লাহ প্লাজার দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত 'মুগ্ধ কর্পোরেশন' নামের প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন পাইকারি বিক্রি হতো। প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতেন পাবনার ঈশ্বরদীর ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান টিপু।
চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে দোকান বন্ধ করে তালার চাবি নিয়ে বাসায় ফিরে যান দোকানের ম্যানেজার রাহিনুল ইসলাম কবির ও তার ভাই সেলস সুপারভাইজার আলিউল কবির। পরদিন ২১ ফেব্রুয়ারি সাপ্তাহিক ছুটির কারণে দোকান খোলা হয়নি। ২২ ফেব্রুয়ারির সকালেও দোকানের দরজা বন্ধ দেখে সন্দেহ হয় ডিএসআর কর্মকর্তার। পরে ম্যানেজার ও সুপারভাইজারের মোবাইলে কল দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পরিস্থিতি অনাকাঙ্ক্ষিত মনে হওয়ায় মালিকসহ মার্কেট মালিকের ছেলে ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকানের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা দেখেন—দোকানের কাউন্টার ও শোকেস তছনছ, নগদ ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল সেট, ব্যাংকের চেকবই, চাবি এবং সিসি ক্যামেরার হার্ডডিক্স উধাও। মোট চুরির পরিমাণ ধরা হয় ৪৮ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
এ ঘটনায় মালিক আব্দুল মান্নান টিপু নাটোর সদর থানায় দুই ভাই রাহিনুল ইসলাম ও আলিউল কবিরকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার পান এসআই গোলাম মোক্তাদী।
মামলার বাদী অভিযোগ করেন, তদন্ত কর্মকর্তা মামলার সাক্ষীদের বক্তব্য না নিয়েই বিভিন্নভাবে সময়ক্ষেপণ করেন। পরে অভিযুক্তদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে তাদের নির্দোষ দেখিয়ে আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করেন। তার দাবি-'তদন্ত কর্মকর্তা কখনোই আমার সঙ্গে দেখা করেননি। বারবার যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি নানা অজুহাত দেন।'
মার্কেট মালিকের ছেলে ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অভিযুক্তদের খালাসের তথ্য শুনে। তারা বলেন, 'আমরা তালা কাটার সময় উপস্থিত ছিলাম এবং নিজের চোখে দেখেছি দোকানের অবস্থা। তদন্ত সঠিকভাবে হয়নি।'
এ বিষয়ে নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতে খায়ের আলম বলেন, 'তদন্ত সঠিক হয়নি বলে মনে হলে বাদী আদালতে নারাজি দিতে পারেন। আদালত চাইলে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিতে পারেন। আর তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে প্রয়োজনীয় তদন্ত করা হবে।'
১০৫ বার পড়া হয়েছে