উত্তরাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহের আভাস, তাপমাত্রা নেমে বাড়ছে দুর্ভোগ
বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৪:৫৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
চলতি ডিসেম্বরের শুরুতেই দেশের উত্তরাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায়।
গত কয়েক দিন ধরে পঞ্চগড় ও কুড়িগ্রামসহ উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় জেঁকে বসেছে শীত, ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে।
মঙ্গলবার দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে মৌসুমের সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। কুড়িগ্রামেও তাপমাত্রা নেমেছে ১২ ডিগ্রিতে। তেঁতুলিয়ায় আগের দিন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা আরও কমে মঙ্গলবার মৌসুমের নতুন সর্বনিম্নে দাঁড়ায়।
এর আগে ২৩ নভেম্বর তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নেমেছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এরপর থেকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ থেকে ১৫ ডিগ্রির মধ্যে থাকলেও গত দুই দিনে হঠাৎ করে তা নিম্নমুখী হয়। একই সঙ্গে দিনের তাপমাত্রাও কমতে শুরু করেছে। সোমবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা আগের দিনের তুলনায় কম।
শীত বাড়ায় সন্ধ্যার পর থেকেই অঞ্চলজুড়ে হালকা কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ার দাপট দেখা যাচ্ছে। রাতভর কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকে এলাকাগুলো। যদিও ভোরের দিকে সূর্য ওঠার পর সাময়িকভাবে ঠান্ডার তীব্রতা কমে, কিন্তু বিকেলের পর আবার বাড়তে থাকে শীতের অনুভূতি।
শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিক রোগী কাশি, সর্দি, শ্বাসকষ্টসহ শীতসংক্রান্ত সমস্যায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে নিউমোনিয়া, ডায়েরিয়া ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ বেশি দেখা যাচ্ছে। রোগীর চাপ বাড়ায় হাসপাতালের ওয়ার্ডে জায়গা না পেয়ে বহু মানুষ বারান্দা ও মেঝেতে থাকছেন।
হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, 'প্রতি বছরের মতো এবারও শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমরা সবাইকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি।'
মঙ্গলবার সকাল ৬টায় কুড়িগ্রামে মৌসুমের সর্বনিম্ন ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ, যা ঠান্ডার অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ঘন কুয়াশা না থাকলেও আর্দ্রতার আধিক্য ও হিমেল হাওয়ার কারণে নদীবিধৌত চর ও দ্বীপচরাঞ্চলের সাড়ে চার লাখের বেশি মানুষ তীব্র ঠান্ডায় ভুগছেন।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান, 'আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় শীতের তীব্রতাও বাড়বে।'
১১৮ বার পড়া হয়েছে