পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে জালিয়াতি: হাসিনা-জয়সহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে রায় আজ
বৃহস্পতিবার , ২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১:২৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
পূর্বাচল অঙ্গনে সরকারি প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দপ্তরদপ্তর তদন্ত ও বিচারের পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ দিন ধরে চলমান মামলার রায় আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে।
এই মামলায় ক্ষমতা অপব্যবহার ও জালিয়াতির মাধ্যমে শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের জানুয়ারিতে এই দুর্নীতির অভিযোগে দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) ছয়টি পৃথক মামলা দাখিল করে। এরপর থেকে মামলার তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম চলমান ছিল। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে এসব মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল হয়। ইতিমধ্যে তিনটি মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে, যেখানে নির্ধারিত রায়ের অপেক্ষায় ছিল পুরো প্রক্রিয়া।
আজকের দিন ধার্য্য অনুযায়ী ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন। মামলার শুনানির শেষ পর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। দুদকের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আইনজীবী খান মো. মাইনুল হাসান লিপন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, শেখ হাসিনা ও অন্যান্য আসামিদের জন্য সর্বোচ্চ সাজা, অর্থাৎ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, দেওয়া হবে বলে প্রত্যাশা করছেন।
অন্যদিকে, গ্রেপ্তার ও কারাগারে থাকা একমাত্র আসামি, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের পক্ষে আইনজীবী শাহীনুর রহমান তার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তিনি অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে দাবি করে খালাসের আবেদন করেন। দুদকের পক্ষ থেকে আবারও উচ্চ শাস্তির প্রত্যাশা প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, প্লট বরাদ্দের এই দুর্নীতির অভিযোগে দুদক চলতি বছর জানুয়ারিতে আরও ছয়টি মামলা করে। এরপর অভিযোগের ভিত্তিতে আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে। বর্তমানে, ২২ জন পলাতক রয়েছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা এই মামলার সাথে সংশ্লিষ্ট থাকায় তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও অব্যাহত তদন্ত চলমান রয়েছে।
গত ১০ নভেম্বর শেখ হাসিনা পরিবারের তিন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এরপর ১৭ নভেম্বর আত্মপক্ষ শুনানিতে শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। একই সময়ে, খুরশীদ আলম নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন।
এছাড়াও, গত ৩১ জুলাই এই তিন মামাসহ মোট ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনা, তার পরিবারের সদস্য ও অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। এই মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছেন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক, পাশাপাশি সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সচিব সালাউদ্দিন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, মো. খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মো. নুরুল ইসলাম, মো. নাসির উদ্দীনসহ আরও অনেকে।
মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের বিভিন্ন প্লট বরাদ্দ গ্রহণ করেন, যেখানে তারা যোগ্য ছিলেন না। অভিযোগে বলা হয়েছে, অপ্রয়োজনীয় সুবিধা ও স্বার্থের জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে ২০৩ নম্বর সেক্টরের ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
১২৮ বার পড়া হয়েছে