পুষ্পধামে সাধুসঙ্গে গুরুসঙ্গে একঝলক
শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫ ৬:০০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
পরমাত্মার ভাই ফকির রমিজ শাহের খেলাফতপ্রাপ্তির প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের জালকুড়ি এলাকার তালতলায় প্রতিষ্ঠিত পুষ্পধামে গত ২০-২১ নভেম্বর ২০২৫ সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠিত হয়।
এই সাধুসঙ্গে আমাদের গুরু বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির নহির শাহসহ কুষ্টিয়া ও অন্যান্য জেলার লালনপন্থী সাধকেরা একত্রিত হয়েছিলেন।
আমরা ২১ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ সকালে বাল্যসেবার পর সেখানে উপস্থিত হই। গুরুর সান্নিধ্য বসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ঢাকার এ যাবৎ কালের সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প। লক্ষ্য করি সাধকেরা সকলে স্থির হয়ে রইলেন। কেউ কোনো ছুটাছুটি করলেন না, এমনকি কারো মুখে ভয় বা আতঙ্কের ছাপ দেখতে পেলাম না। আর সেটা থাকবেইবা কেন সাধকেরা তো 'জ্যান্তে মরা', মহাশূন্যের সাধনায় সর্বস্বত্যাগী, সব মোহ-মায়ার ঊর্ধ্বে তাঁরা। জীবনের মায়া ত্যাগ করেই হয়েছেন সাধক। অতএব সর্বক্ষেত্রে তাঁরা শান্ত থাকবেন এটাই স্বাভাবিক।
এরপর সাধুসঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হলো, বিশেষ করে ওই এলাকার বেশ কিছু আগ্রহী তরুণদের সঙ্গে সাক্ষাৎ পেয়ে ভালো লাগলো, যাঁরা মনেপ্রাণে চান সাধনার পথে আসতে। আসলে তাঁরা সাধকদের সৌন্দর্য অবলোকন করে মুগ্ধ হয়েছেন।
এছাড়া, শেষে এলো বোরকা পরিহিতা বেশ কয়েকজন নারী। তাঁদের সাক্ষাৎ পেয়ে আমরাও মুগ্ধ হলাম। আশ্চর্য ব্যাপার হলো তাঁরা প্রত্যেকেই চিশতিয়া নিজামী তরিকায় দীক্ষিত। শুধু তাই নয়, তাঁদের কেউ বাংলাদেশের প্রায় সকল মাজারে ভ্রমণ করেছেন, মাজারে অবস্থান গ্রহণ করেছেন, এমনকি আজমীর শরীফ ভ্রমণ করেছেন। শুধু তাই নয়, তাঁরা বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার, সনাতনী মন্দির, বিভিন্ন গুপ্ত সাধন ক্ষেত্রেও ভ্রমণ করেছেন।
বাংলাদেশের সাধন সংস্কৃতির এই মোহনীয় সৌন্দর্য ভেতরে ভেতরে প্রবাহিত হতে দেখে ভালো লাগে। আমাদের বিশ্বাস, এই ধারা ঐতিহ্যগতভাবেই গোপনে প্রসারিত হচ্ছে। উদার মানুষেরা নিজ দায়িত্বে এর যত্ন নিয়ে আসছেন। আমাদের বিশ্বাস, এ ধরারা বেগবান হলে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে সত্যিকার শান্তি ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধি পাবে।
সাধুগুরুদের জয় অনিবার্য। মঙ্গল হোক।
লেখক : লোক গবেষক।
(লেখাটি লেখকের ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে)
১৩১ বার পড়া হয়েছে