মানিকগঞ্জে আমন ধানের আবাদ হলেও শঙ্কায় কৃষকরা

বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৪:০৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মানিকগঞ্জে চলতি মৌসুমে আমন ধানের আবাদ বেশ ভালো হলেও কৃষকরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। কারণ ভরা বর্ষায়ও জমিতে পানি না থাকায় ফলন নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
চাষিরা বলছেন, যদি দ্রুত পানি না আসে, তাহলে ধানের শীষ সঠিকভাবে গঠন হবে না, যা বড় ধরনের লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলায় চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ২০৮ হেক্টর জমিতে, যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার ২৮৩ মেট্রিক টন। বোনা আমনের আবাদ হয়েছে ১৮ হাজার ৫৬১ হেক্টর জমিতে, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৫৭৫ মেট্রিক টন।
এর আগের বছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রোপা আমনের উৎপাদন ছিল ৪৫ হাজার ৮২৭ মেট্রিক টন এবং বোনা আমনের উৎপাদন ছিল ১৮ হাজার ৬৩০ মেট্রিক টন। তারও আগে, ২০২৩-২৪ সালে রোপা আমন থেকে উৎপাদন হয় ৪১ হাজার ৮৩৫ মেট্রিক টন এবং বোনা আমন থেকে ২৫ হাজার ২১৬ মেট্রিক টন।
তবে এবার প্রাকৃতিক বৈরিতার কারণে ফলন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
নালী ইউনিয়নের চাষি রতন দেওয়ান বলেন, ‘গত বছর ফলন ভালো ছিল। কিন্তু এবার ভরা বর্ষায়ও জমিতে পানি নেই। ধান গাছের নিচে যদি পানি না থাকে, তাহলে গাছ শুকিয়ে যাবে, শীষ ঠিকমতো বের হবে না।’
নবগ্রামের কৃষক মিলন মিয়াও জানান, ‘আমন ধানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি পানি ছাড়া সম্ভব নয়। পানির সাথে সাথে ধান গাছও বেড়ে ওঠে। কিন্তু এবার এমন সময়েও পানি নেই। কয়েক দিন বৃষ্টি হলেও পরে যদি খরা পড়ে, তাহলে গাছ নষ্ট হয়ে যাবে।’
উভাজানী গ্রামের কৃষক মজলিস মিয়া বলেন, ‘গত বছর আল্লাহর রহমতে ভালো ফলন পেয়েছিলাম। এবার ৪ বিঘা জমিতে আমন করেছি, কিন্তু এখনো নিশ্চিত না যে ফলন হবে কিনা। পানি না থাকায় আমরা দুশ্চিন্তায় আছি।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহজাহান সিরাজ জানান, ‘আমন ধান এখন কুশি পর্যায়ে রয়েছে। কৃষকদের দুশ্চিন্তা মূলত শীষ বের হওয়ার সময় বৃষ্টি না হওয়া নিয়ে। যদি তখন বৃষ্টি না হয়, তাহলে আমরা সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করব। আশা করি, ফলনে বড় ধরনের সমস্যা হবে না।’
তবে কৃষকদের আশঙ্কা, প্রয়োজনীয় সময় যদি সেচ সুবিধা না পাওয়া যায় কিংবা প্রকৃতি সহায় না হয়, তাহলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন তারা।
১০৪ বার পড়া হয়েছে