সর্বশেষ

আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: যেখানে সমাধান

মনজুর এহসান চৌধুরী
মনজুর এহসান চৌধুরী

মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫ ৫:২১ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
১৮ আগস্ট ২০২৫ বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক শুধু দুই দেশের নয়, ইউরোপ ও বিশ্বের পরিস্থিতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করছে।

বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইউরোপীয় বড় চার রাষ্ট্র—জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও ইতালি—এর সরকারপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন, যার ফলে এ আলোচনায় আন্তর্জাতিক গুরুত্ব বেড়েছে বহুগুণ।

ইউরোপীয় রাষ্ট্রপ্রধানদের সক্রিয় উপস্থিতি
বৈঠকে ইউরোপিয়ান নেতাদের সক্রিয়তা নতুন মাত্রা যোগ করেছে। জার্মান চ্যান্সেলর, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী—সবাই তাদের দেশের অবস্থান তুলে ধরেন এবং ইউক্রেনের জন্য সামরিক, কূটনৈতিক ও মানবিক সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। বিশেষ জোর দেয়া হয় দ্রুত যুদ্ধবিরতি, শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং ভবিষ্যত শান্তি চুক্তির রূপরেখা ঠিক করার ওপর।

পুতিনের শর্ত ও শান্তি আলোচনার জটিলতা
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষ থেকে তিনটি প্রধান শর্ত উত্থাপিত হয়েছে—
১. ইউক্রেনের কিছু অঞ্চল (বিশেষত ডনবাস) রাশিয়াকে ছেড়ে দিতে হবে।
২. ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ না দেয়া নিশ্চিত করতে হবে।
৩. ন্যূনতম নিরাপত্তা গ্যারান্টির প্রয়োজন, যাতে রাশিয়ার স্বার্থ সংরক্ষিত থাকে।
ট্রাম্প এই শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতা করছেন এবং ইউক্রেনকে পুতিনের দাবি মেনে নিতে উৎসাহিত করছেন, যদিও প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি দেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের স্বার্থের বিষয়ে তার অবস্থানে দৃঢ়। তিনি মূল ভূখণ্ড ছাড় নিয়ে আপসহীন থাকলেও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সামরিক ও মানবিক সহায়তা জোরালোভাবে দাবি করেন।

আলোচনা ও সিদ্ধান্তের সারাংশ
বৈঠকে যে সকল বিষয়গুলো উঠে এসেছে এর মধ্যে, ইউক্রেন-রাশিয়া সরাসরি শান্তি আলোচনার জন্য প্রস্তুত, তবে বড় ধরনের ভূখণ্ড ছাড় নিয়ে জেলেনস্কি এখনও রাজি নন।
যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত করেছে, ইউক্রেনকে ‘শক্তিশালী নিরাপত্তা সুরক্ষা’ ও সামরিক সহায়তা অতিরিক্তভাবে দেবে।
ইউরোপীয় দেশগুলোও মানবিক ও সামরিক সহায়তায় ঐক্যবদ্ধ থাকার অবদান রাখবে।
ন্যাটো-সংক্রান্ত ইস্যুতে কোনো চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি; আলোচনা চলছে।
পরবর্তী পর্যায়ে সরাসরি পুতিন-জেলেনস্কি বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।

যুদ্ধ কোন দিকে এগুচ্ছে?
এই বৈঠক, আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা ও শান্তি আলোচনার নতুন দিক খুলেছে। ইউক্রেনের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের চাওয়া। রাশিয়ার রাজনৈতিক ও ভূ-অবস্থানগত দাবি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সমর্থন, সব মিলিয়ে যুদ্ধবিরতি এবং চূড়ান্ত শান্তিপ্রস্তাবের জন্য শক্ত ভিত গড়ে উঠছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এলাকার প্রশ্নে আপস না হলেও নিরাপত্তা গ্যারান্টি ও কূটনৈতিক উদ্যোগেই এখন যুদ্ধশেষের আশা জেগেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় শক্তিগুলোর সক্রিয় ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ বৈঠকে চূড়ান্ত শান্তি চুক্তি সম্ভব, তবে সংকটের গভীরতা এখনও কাটেনি এবং আলোচনা অব্যাহত আছে।

শেষকথা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ এখন আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা ও শান্তি আলাপের কেন্দ্রবিন্দুতে। যতক্ষণ না সবার স্বার্থের উপর আপোস হয়, চূড়ান্ত শান্তি চুক্তি সম্ভব নয়। তবে সোমবারের বৈঠক যুদ্ধ অবসানের দিকে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

লেখক: সাংবাদিক, কলামিস্ট 

৪৮৯ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
আন্তর্জাতিক নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন