জনি হত্যা: দুই পুলিশ সদস্যের যাবজ্জীবন বহাল, কমেছে এক জনের সাজা

সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫ ৮:৪৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজধানীর পল্লবী থানায় পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেন জনি হত্যা মামলায় দুই পুলিশ সদস্যের যাবজ্জীবন সাজা বহাল রেখেছে হাইকোর্ট।
অপর এক পুলিশ সদস্যের যাবজ্জীবন দণ্ড কমিয়ে ১০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১১ আগস্ট) বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কামরুজ্জামানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়। অন্যদিকে, এএসআই রাশেদুল হাসানের দণ্ড কমিয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পুলিশের সোর্স রাসেলকে খালাস দেওয়া হয়।
২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পল্লবীর ইরানি ক্যাম্পে এক গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে পুলিশের সোর্স সুমনের অশালীন আচরণের প্রতিবাদ করেছিলেন জনি ও তার ভাই ইমতিয়াজ হোসেন। এর জেরে সুমনের ডাকে পুলিশ এসে দুই ভাইকে থানায় ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইশতিয়াককে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট নিহত জনির ভাই ইমতিয়াজ হোসেন 'নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩'-এর আওতায় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন। এটি ছিল উক্ত আইনে করা দেশের প্রথম মামলা।
বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত তিন পুলিশ সদস্য—এসআই জাহিদুর রহমান, এএসআই রাশেদুল হাসান ও এএসআই কামরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দুই লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ দেন।
পুলিশের সোর্স সুমন ও রাসেলকে সাত বছর করে কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সুমন ইতোমধ্যে সাজা ভোগ করে মুক্তি পেয়েছেন, আর কামরুজ্জামান শুরু থেকেই পলাতক।
বিচারিক রায়ের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে এসআই জাহিদুর রহমান, এএসআই রাশেদুল হাসান ও পুলিশের সোর্স রাসেল হাইকোর্টে আপিল করেন। শুনানি শুরু হয় ২০২৫ সালের ৯ জুলাই। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হলো।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তপাদার, বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম রেজাউল করিম এবং আসামিপক্ষে ছিলেন এস এম শাহজাহান ও আবদুর রাজ্জাক।
রায় ঘোষণার সময় নিহত জনির ভাই ইমতিয়াজ হোসেনসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
১৪১ বার পড়া হয়েছে