দৌলতপুরে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে বালু উত্তোলন

বৃহস্পতিবার , ৭ আগস্ট, ২০২৫ ৬:০০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের চৌদ্দহাজার মৌজায় হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রকাশ্যে চলছে পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনের রমরমা ব্যবসা।
ড্রেজার ও বলগেট ব্যবহার করে দিনের আলোতেই উত্তোলিত হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার বালু। এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনী, আর স্থানীয় প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় চরম ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের পৃষ্ঠপোষকতায় এই অবৈধ কার্যক্রম চলছে। প্রতিবাদ করলেই হুমকি, এমনকি গুলিবর্ষণেরও শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। সম্প্রতি ভেড়ামারা উপজেলার ফয়জুল্লাপুর ঘাটে সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন স্থানীয় বাসিন্দা আমিরুল গাইন। এ ঘটনায় মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
নদীভাঙনে ইতোমধ্যেই ফসলি জমি, বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন বহু পরিবার। ঝুঁকির মুখে পড়েছে শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ফিলিপনগর-মরিচা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। এলাকাবাসীর দাবি, প্রতিদিন ৫০-৬০টি বলগেট নদী থেকে বালু বহন করে নিয়ে যাচ্ছে, এতে নদীপাড়ের ভাঙন দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
তদন্তে জানা গেছে, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার “মেসার্স সরকার ট্রেডার্স” নামে একটি প্রতিষ্ঠান ২৪ একর বৈধ ইজারা নিয়ে কার্যক্রম শুরু করলেও তারা নিয়ম ভেঙে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের মরিচা ইউনিয়নের ভেতরে এসে বালু উত্তোলন করছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার প্রশাসনকে জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে মেসার্স সরকার ট্রেডার্স-এর মালিক এস.এম. একলাস আহমেদ বলেন, “আমরা রাজশাহীতে বৈধ ইজারার আওতায় কাজ করি। কেউ যদি অন্য এলাকায় গিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলে, সেটা বেআইনি। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।”
দৌলতপুর থানার ওসি সোলাইমান শেখ জানান, “অবৈধ উত্তোলন বা সন্ত্রাসী কার্যকলাপের তথ্য পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসনকে সাথে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী কালবেলাকে বলেন, “বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমরা জানি। অভিযান চালিয়েও কাউকে ধরতে পারিনি। রাজশাহীর বাঘা উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হাইকোর্ট ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় এই অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাদের দাবি, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে সন্ত্রাসীদের দমন ও বালু উত্তোলন বন্ধ করা হোক—এতে ফিরে আসবে স্বস্তি।
১২৫ বার পড়া হয়েছে