মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় শুরু হচ্ছে সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্যগ্রহণ

রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫ ৪:১৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন এবং প্রথম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে এই ঐতিহাসিক বিচার।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে আজকের শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ট্রাইব্যুনালের অনুমতি সাপেক্ষে আজকের সূচনা বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। একই সঙ্গে প্রথম সাক্ষী হিসেবে একজনের জবানবন্দি গ্রহণের কার্যক্রম শুরু হবে। ট্রাইব্যুনালের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এই সম্প্রচার দেখা যাবে।
এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তার পাশাপাশি মামলার অন্য দুই আসামি হলেন—সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল এই তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্য উদঘাটনে রাজসাক্ষী হতে আবেদন করলে তা গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের সময় সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক নিপীড়ন, হত্যা, গুম এবং নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এই পটভূমিতে গত ১ জুন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। এরপর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটিই পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালের প্রথম বিবিধ মামলা (মিস কেস) হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
গত ১৬ জুন ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে হাজির হতে একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয়। তবে সাত দিনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তারা আত্মসমর্পণ না করায় তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি করা হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার পাশাপাশি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা চলমান রয়েছে। একটি মামলায় তাকে আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। অন্য মামলাটি ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড সংশ্লিষ্ট।
১০৬ বার পড়া হয়েছে