কিটের অভাব ও ঢাকার বাইরে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় বাড়ছে উদ্বেগ

বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫ ৫:৫৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
নতুন করোনা শনাক্তের জন্য প্রয়োজনীয় কিটের অভাব ও ঢাকার বাইরে পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিট সংগ্রহের চেষ্টা চললেও এখনও কিছু কিট হাতে এসেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর জানান, জরুরি প্রয়োজনের জন্য আন্তর্জাতিক রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ২৮ হাজার দ্রুত শনাক্তকরণ কিট সরবরাহ করেছে। এদিন আরও ১০ হাজার আরটিপিসিআর কিট দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের কাছ থেকে ১ লাখ আরটিপিসিআর কিট ও ৫ লাখ দ্রুত শনাক্তকরণ কিটের জন্য আবেদন করা হয়েছে। দেশের কিছু ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানও কিট বিক্রির জন্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। চীনা দূতাবাসের সঙ্গেও আলোচনা চলছে।
অতীতে ঢাকা শহরের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ১০১ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, যার মধ্যে ১৩ জনের করোনা শনাক্ত। এর ফলে বোঝা যায়, ঢাকার বাইরে করোনা পরীক্ষা কার্যত বন্ধ। কক্সবাজারে এ মাসে ৩ জন, চট্টগ্রামে ৩ জন এবং বরিশাল ও সিলেটে কোনও করোনা পরীক্ষার কিট নেই। এই পরিস্থিতি জনস্বাস্থ্যবিদদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ সংক্রমণের হার বাড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, সংক্রমণ দ্রুত বাড়লে ঝুঁকি বাড়বে। এ জন্য ব্যক্তিগত, সামাজিক ও সরকারি স্তরে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। মহাপরিচালক মহোদয় জানাচ্ছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনো কোনো সতর্কতা জারি করেনি, তবে প্রতিবেশী দেশ ভারত দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে—এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
অপরদিকে, ২, ৪, ৬ ও ৮ জুন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা অনলাইনে সভা করে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। জেলার সিভিল সার্জন ও সরকারি হাসপাতালে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অক্সিজেন সরবরাহ ও টিকা কার্যক্রমের বিষয়েও পর্যালোচনা চলছে। বর্তমানে ফাইজার টিকার ৩১ লাখ ডোজ মজুত রয়েছে, যার মধ্যে ১৭ লাখের বেশি টিকার মেয়াদ শেষের পথে। কারিগরি কমিটি এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে মতামত দেবে।
নতুনভাবে বাংলাদেশে অমিক্রনের এক উপপ্রজাতি জেএন–১ শনাক্ত হচ্ছে, যা তুলনামূলকভাবে কম তীব্রতাপূর্ণ। তবে সংক্রমণের হার বাড়ার খবর ঈদের সময়ের সঙ্গে জড়িত, যখন মানুষ পশুর হাটে, শহর থেকে গ্রামে ও পর্যটন কেন্দ্রে ভিড়ের মধ্যে ছিল। এর ফলে সংক্রমণ ঝুঁকি আরও বেড়েছে।
প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ, এরপর থেকে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯,৫০০। জনস্বাস্থ্যবিদেরা বারবার সতর্ক করে বলছেন, মাস্ক ব্যবহার, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, নিয়মিত হাত ধোয়া ও স্বাস্থ্যবিধি মানা জরুরি। মহামারির শুরু থেকে এসব নির্দেশনা মানতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
১১৭ বার পড়া হয়েছে