সর্বশেষ

জাতীয়

ঢাকায় একদিনে ১৯৬ মিমি বর্ষণ, বৃষ্টি নামলেই নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫ ৭:৪৫ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় ১৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের ফলে শহরের অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।

অল্প সময়ের ভারি বৃষ্টিতে নগরীর রাস্তাঘাট, ফুটপাত ও গলিপথে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ।

এদিকে, সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কার্যকর পদক্ষেপের অভাব ও দায়িত্বহীনতার অভিযোগ তুলেছেন নগর বিশেষজ্ঞ ও সচেতন নাগরিকরা। তাদের দাবি, জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা ব্যয় হলেও বাস্তব পরিবর্তন চোখে পড়ছে না।

হাজার কোটি টাকা খরচ, কাজের কাজ কিছুই হয়নি
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন জলাবদ্ধতা নিরসন ও খাল পরিষ্কারের নামে প্রায় হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। কিন্তু অল্প বৃষ্টিতেই রাজধানী কার্যত অচল হয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, এ অর্থের যথাযথ ব্যবহার না হওয়ায় নগরবাসী সুফল থেকে বঞ্চিত।

নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল-নর্দমার উন্নয়ন দরকার হলেও রুটিন পরিচর্যা ও পরিষ্কারের কাজও করা হচ্ছে না। দুই সিটি করপোরেশন এখনো দক্ষ ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা গড়তে পারেনি। এমনকি খাল-নর্দমার উন্নয়নে অভিজ্ঞ জনবলও নেই।”

খাল দখল-ভরাট, অদক্ষতা ও অনীহা
বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, রাজধানীর অধিকাংশ খাল দখল ও ভরাট হয়ে গেছে। কোথাও খাল ভরাট করে নির্মিত হয়েছে বক্স কালভার্ট, আবার কোথাও গড়ে উঠেছে স্থাপনা। এ ছাড়া বহু পুকুরও নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। পূর্ববর্তী সরকারের সময় দায়িত্বরত সংস্থাগুলোর আন্তরিকতার অভাব এবং বর্তমান সময়েও কার্যকর কোনো উদ্যোগের অনুপস্থিতি নগরীর সংকট আরও ঘনীভূত করছে।

বর্ষা আসার আগেই আতঙ্কে নগরবাসী
ইতোমধ্যে কয়েক দফা বৃষ্টিতে নগরীর বিস্তীর্ণ এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে বৃহস্পতি ও শুক্রবারের বৃষ্টিপাতে রাজধানীর সিংহভাগ অঞ্চল কার্যত অচল হয়ে যায়। সামনে বর্ষা মৌসুম আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ ও নগর পরিকল্পনাবিদরা।

সিটি করপোরেশনের দাবি: কাজ চলছে
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফারুক হাসান মো. আল মাসুদ জানান, “খাল ও নর্দমা পরিষ্কারে আমরা প্রশাসকের নির্দেশে জোর তৎপরতা চালাচ্ছি। জলাবদ্ধতার নিরসনে স্পটভিত্তিক কাজও চলছে।”

এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ সফি উল্লাহ সিদ্দিক ভূঁইয়া বলেন, “বর্ষার জলাবদ্ধতা মোকাবিলা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। তবে আমরা সর্বশক্তি দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে একটি খাল উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে, যার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন।”

নগরবাসীর প্রত্যাশা: সুশাসন ও জবাবদিহি
অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ পোহানো নগরবাসীর দাবি, পরিস্থিতির উন্নয়নে যথাযথ তদন্ত ও দোষীদের জবাবদিহির আওতায় আনা হোক। একই সঙ্গে খাল ও নর্দমা পুনরুদ্ধার, সংরক্ষণ এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার টেকসই উন্নয়নে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

১২৩ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন