আমি এই এনসিপির অংশ হচ্ছি না: মাহফুজ আলম
রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩:৩৬ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নির্বাচনী সমঝোতার আওতায় প্রার্থী হতে প্রস্তাব তাঁকেও দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে মাহফুজ আলম বলেছেন, তিনি এই এনসিপির অংশ হচ্ছেন না।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে জামায়াত ও এনসিপির নির্বাচনী সমঝোতার ঘোষণা দেওয়ার পর আজ রোববার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে এ কথা বলেন মাহফুজ আলম। অবশ্য মাহফুজ আলম ছাড়াও এনসিপির অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা নিয়ে ইতিমধ্যে হয় দল ছেড়েছেন, নয়তো এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে বক্তব্য দিয়েছেন।
জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির নেতা হিসেবে যে তিন ছাত্রনেতা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন, তাঁদের একজন মাহফুজ আলম। অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা তরুণদের দল ও সংগঠন এনসিপি ও নাগরিক কমিটিতে তাঁর প্রভাব ছিল। তবে এ মাসের প্রথম দিকে মাহফুজ আলম উপদেষ্টা পরিষদ ছাড়ার পর তিনি এনসিপি থেকে প্রার্থী হবেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। এখন নির্বাচন ঘিরে জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির যুক্ততা চূড়ান্ত হওয়ার পর এই দলের সঙ্গে তিনি আর যুক্ত না হওয়ার সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করলেন।
ফেসবুকে মাহফুজ আলম লিখেছেন, ‘নাগরিক কমিটি ও এনসিপি জুলাইয়ের সম্মুখসারির নেতৃত্বে সংগঠিত হয়েছিল। এ দুটি সংগঠনে আমার জুলাই সহযোদ্ধারা থাকায় গত দেড় বছর আমি চাহিবামাত্র তাঁদের পরামর্শ, নির্দেশনা ও নীতিগত জায়গায় সহযোগিতা করেছি।’
বিদ্যমান বাস্তবতায় এই সম্পর্ক আর থাকছে না জানিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমার জুলাই সহযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান, স্নেহ ও বন্ধুত্ব মুছে যাবে না। কিন্তু আমি এ এনসিপির অংশ হচ্ছি না। আমাকে জামায়াত-এনসিপি জোট থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়নি—এটা সত্য নয়। কিন্তু ঢাকার কোনো একটি আসনে জামায়াত-এনসিপি জোটের প্রার্থী হওয়ার চেয়ে আমার দীর্ঘদিনের অবস্থান ধরে রাখা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।’
নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে মাহফুজ আলম বলেন, ‘নতুন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বন্দোবস্ত, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক লড়াই, সামাজিক ফ্যাসিবাদ মোকাবিলা, রিকনসিলিয়েশন, দায়-দরদের সমাজসহ অনেক কথাই আমি বলেছি, যেগুলো আমার জুলাই সহযোদ্ধারা উক্ত দুটি সংগঠন থেকে বারবার বলেছেন। কিন্তু তারা কি এগুলো ধারণ করতেন? এনসিপিকে একটি বড় জুলাই আমব্রেলা হিসেবে স্বতন্ত্র উপায়ে দাঁড় করানোর জন্য আমি সব ধরনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু অনেক কারণেই সেটা সম্ভব হয়নি।’
ইতিহাসের এই চলমান পর্বে বাংলাদেশ একটি শীতল যুদ্ধে আছে উল্লেখ করে মাহফুজ বলেন, ‘এ পর্বে কোনো পক্ষ না নিয়ে নিজেদের বক্তব্য ও নীতিতে অটল থাকাই শ্রেয়।’
বিকল্প তরুণ/জুলাই শক্তির সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি মন্তব্য করে মাহফুজ আলম বলেন, ‘বরং আমি গত দেড় বছরে যা বলেছি, যে নীতিতে বিশ্বাস রেখেছি, তা অব্যাহত রাখব—রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সকল উপায়ে।’
কেউ তাঁর সঙ্গে যোগ দিলে তাঁকে স্বাগত জানাবেন মাহফুজ আলম। নতুন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বন্দোবস্ত সম্ভব ও বাস্তব দাবি করে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘বিকল্প ও মধ্যপন্থী তরুণ/জুলাই শক্তির উত্থান অত্যাসন্ন।’
১২১ বার পড়া হয়েছে