দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলীর কারাভোগ
শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১০:০৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় এক প্রধান শিক্ষককে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেড় মাস কারাগারে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষক হলেন হারাভাঙ্গা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী টুকুল।
জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে গাংনী থানায় দায়ের করা একটি বিএনপি অফিস ভাঙচুর সংক্রান্ত মামলায় (মামলা নং-১৭, জিআর নং-৯৭/২০২৫) তাকে আসামি করা হয়। মামলাটি করা হয় আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন, ২০০২ (সংশোধিত ২০২৪) এর বিভিন্ন ধারায়। ওই মামলায় ইদ্রিস আলী টুকুলকে সর্বশেষ ৫০ নম্বর আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি কখনোই পলাতক ছিলেন না। একজন প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়মিত বিদ্যালয়, অফিস ও আদালতে চলাচল করতেন এবং নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। অথচ মামলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। সংশ্লিষ্টদের মতে, বিষয়টি জানলে তিনি স্বেচ্ছায় আদালতে আত্মসমর্পণ করতেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গাংনী উপজেলার ১৪টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে অতিরিক্ত শাখা দেখিয়ে শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে একটি প্রভাবশালী চক্র কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এ অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী টুকুল অভিযোগ উত্থাপন করেন এবং সাপ্তাহিক ডাকুয়া পত্রিকায় এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে খুলনা বিভাগের কমিশনারের নির্দেশে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত শুরু হওয়ার পরই ক্ষুব্ধ একটি মহল তাকে ফাঁসাতে বিএনপি অফিস ভাঙচুর মামলায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করিয়েছে বলে বিভিন্ন মহল মনে করছে।
অভিযোগকারীদের দাবি, ঘটনার সময় প্রধান শিক্ষক টুকুল কোথায় ছিলেন তা তার মোবাইল ফোনের কল ডিটেইল রেকর্ড (সিডিআর) যাচাই করলেই প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হবে। ইতোমধ্যে মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি একটি প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন, যেখানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে— ইদ্রিস আলী টুকুল ওই ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন।
এ ঘটনায় শিক্ষক সমাজসহ সচেতন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তারা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন এবং মিথ্যা মামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
১৭০ বার পড়া হয়েছে