শৈত্যপ্রবাহে স্থবির উত্তরের জনজীবন, বিপাকে নিম্নআয়ের মানুষ
মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৪:১০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
উত্তরের জনপদে হঠাৎ জেঁকে বসা শীত ও ঘন কুয়াশায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। রংপুর বিভাগসহ আশপাশের জেলাগুলোতে কয়েক দিন ধরে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
সকাল গড়ালেও সূর্যের দেখা মিলছে না, ঠাণ্ডা বাতাস ও অতিরিক্ত আর্দ্রতায় শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে কয়েক গুণ বেশি।
রংপুর, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও গাইবান্ধায় ভোর থেকেই চারপাশ ঢেকে যাচ্ছে কুয়াশার চাদরে। দৃশ্যমানতা এতটাই কমে যাচ্ছে যে দিনের আলো থাকলেও সড়কে যানবাহন চলাচলে হেডলাইট জ্বালাতে হচ্ছে। এতে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে, বিশেষ করে ভোর ও সকালের দিকে।
শীতের কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর, রিকশাচালক ও ভ্যানচালকেরা। ঠাণ্ডায় যাত্রী ও কাজ কমে যাওয়ায় তাদের দৈনিক আয় হ্রাস পেয়েছে। কুড়িগ্রামের রিকশাচালক বাবুল মিয়া জানান, আয় কম থাকায় নতুন গরম কাপড় কেনা সম্ভব হচ্ছে না; পুরোনো কাপড়েই দিন কাটাতে হচ্ছে।
শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থদের ওপর শীতের প্রভাব তুলনামূলক বেশি পড়েছে। ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। শীত নিবারণে অনেকেই ফুটপাত ও ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে কম দামের গরম কাপড় কিনছেন। তবে ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, পুরোনো শীতের কাপড়ের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে, যা নিম্নআয়ের মানুষের জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই সময়ে রংপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল প্রায় ৯৯ শতাংশ, যা কুয়াশাকে আরও ঘনীভূত করছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আর্দ্রতা বেশি থাকায় কুয়াশা সহজে কাটছে না এবং আগামী দুই থেকে তিন দিন শীতের এই প্রকোপ অব্যাহত থাকতে পারে। এ অবস্থায় সতর্কতা অবলম্বন ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
১১৫ বার পড়া হয়েছে