পাংশা পৌর ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভুল তদন্ত প্রতিবেদন তৈরির অভিযোগ
রবিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:৫৩ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজবাড়ীর পাংশা পৌর ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসৎ উদ্দেশ্যে ভুল তদন্ত প্রতিবেদন তৈরির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, পরস্পর যোগসাজশে জেনেশুনে একটি পক্ষকে ক্ষতিগ্রস্ত ও অপর পক্ষকে লাভবান করতে তিনি মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
জানা গেছে, পাংশা উপজেলা ভূমি অফিসে দায়েরকৃত মিস কেস নং XIII-৫৯/২০২৫-২৫-এর পরিপ্রেক্ষিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) পাংশা পৌর ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। তবে অভিযোগ অনুযায়ী, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জিয়াউল হক সরেজমিনে উপস্থিত না হয়েই তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মিস কেসের আবেদনকারী ইউসুফ হোসেনসহ সংশ্লিষ্টদের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য মোহাম্মদ আবু মুসা ও তার সহযোগীদের পক্ষাবলম্বন করে ০২ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে ১১০ নং স্মারকে একটি ভুল তদন্ত প্রতিবেদন সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর প্রেরণ করা হয়।
এদিকে মোহাম্মদ আবু মুসা ও পরিতোষ গং ভূমি অফিসের সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে মিউটেশন কেস নং Ac(L)-Ix-P-২৯৭/২০২৪-২৫ এবং Ac(L)-Ix-P-২২১৪/২০২৪-২৫-এর মাধ্যমে নামজারি অনুমোদন আদায় করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরবর্তীতে এসব নামজারি বাতিলের জন্য আবেদন করা হলেও তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রথমে মিস কেস গ্রহণ করেননি। পরে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)-এর কাছে আবেদন করার পর মিস কেসটি গ্রহণ করা হয়।
ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জিয়াউল হক তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন যে, আবেদনকারীরা নালিশী জমির দখলে নেই। তবে অভিযোগকারীদের দাবি, তিনি সরেজমিনে না গিয়ে এই মন্তব্য করেছেন, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
অভিযোগকারীদের তথ্যমতে, সিদ্দিকুর রহমান, ইউসুফ হোসেন ও শহিদুল ইসলাম পাংশা উপজেলার মৈশালা মৌজার এসএ ৫৭১ ও বিএস ৩৮৯ খতিয়ানভুক্ত জমি যথাযথ রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে ১৯৯৮ সালে ক্রয় করে দীর্ঘ প্রায় ২৮ বছর ধরে ভোগদখলে রয়েছেন। তারা নিয়মিত পৌর কর পরিশোধ করছেন এবং সরকারি অনুমোদনে বিদ্যুৎ, পানি সংযোগসহ বসতঘর নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন।
এমন অবস্থায় অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১০৯ ও ১৬৬ ধারাসহ দুর্নীতি দমন আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগকারীরা এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে অনুসন্ধান এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সরেজমিন তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে জানতে পাংশা পৌর ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জিয়াউল হকের সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টার পরও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
১৫৯ বার পড়া হয়েছে