ঝিনাইদহে পেঁয়াজ চারা রোপণ: শ্রমিক সংকটে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা
বৃহস্পতিবার , ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১০:০০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষি প্রধান জেলা ঝিনাইদহে শুরু হয়েছে পেঁয়াজের চারা রোপণের মৌসুম। শীত ও ঘন কুয়াশাকে উপেক্ষা করে কাক ডাকা ভোর থেকেই মাঠে নেমে পড়ছেন কৃষকরা।
বিস্তীর্ণ জমিজুড়ে একের পর এক ফসলের চারা বসানোর দৃশ্য এখন জেলাজুড়ে চোখে পড়ছে। জেলার শৈলকুপা উপজেলাতেই সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজের আবাদ হয়ে থাকে।
চলতি মৌসুমে কৃষকরা লাল তীর কিং, রাণী ওয়ান, রাজশাহী কিংসহ উচ্চফলনশীল জাতের পেঁয়াজ রোপণ করছেন। তবে মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে বীজতলা নষ্ট হওয়ায় অনেক কৃষককে নতুন করে চারা তৈরি করতে হয়েছে, ফলে তাদের ব্যয় বেড়েছে।
শ্রমিক সংকট এবার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পেঁয়াজ রোপণে প্রতি বিঘায় কমপক্ষে ২০ জন শ্রমিক প্রয়োজন হলেও একযোগে রোপণ শুরু হওয়ায় শ্রমিকের চাহিদা বেড়ে গেছে। এতে কাজের গতি কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
বিপ্রবগদিয়া গ্রামের কৃষক বাকু শেখ জানান, 'আমি ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ লাগাচ্ছি। কিন্তু শ্রমিক পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বৃষ্টিতে চারা নষ্ট হওয়ায় আবার নতুন চারা তৈরি করতে হয়েছে। তার ওপর সারও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। উৎপাদন খরচ বাড়লেও শেষ পর্যন্ত ভালো দাম পাবো কি না-এই চিন্তা থেকেই যাচ্ছে।'
এদিকে দেবতলা গ্রামের কৃষক নাসির উদ্দিনও একই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,'হালি পেঁয়াজের রোপণ জোরেশোরেই শুরু হয়েছে। এজন্য শ্রমিকের চাপ অনেক। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একজন শ্রমিক ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে। শ্রমিক সংকটের কারণে রোপণে দেরি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।'
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান জানান, জেলার ছয়টি উপজেলায় এ মৌসুমে ১৩,৮৪০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০,২৮২ হেক্টর, যেখানে আবাদ হয়েছিল ১৩,৭১২ হেক্টরে এবং উৎপাদন হয়েছিল ২৭৩,২১২ মেট্রিক টন।
তিনি আরও বলেন, 'শুরুর দিকে অতিবৃষ্টিতে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও চাষিরা নতুন করে চারা তৈরি করেছেন। এতে লক্ষ্যমাত্রায় কোনো প্রভাব পড়বে না। জেলায় সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে এবং কৃত্রিম সংকট এড়াতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত নজরদারি করা হচ্ছে।'
১৫৭ বার পড়া হয়েছে