ঈশ্বরদীতে ৮ কুকুরছানা হত্যার ঘটনায় মামলা; অভিযুক্ত নারী গ্রেপ্তার
বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের আবাসিক এলাকায় আটটি কুকুরছানা হত্যার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর নিশি রহমান নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে শহরের পিয়ারপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। তিনি ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের ঈশ্বরদী ব্যবস্থাপক হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী।
এর আগে রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে প্রাণী কল্যাণ আইন-২০১৯ এর ৭ ধারায় ঈশ্বরদী থানায় মামলা করেন। মামলাটি রেকর্ডের সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার, ‘পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার’-এর প্রতিনিধি এবং স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অন্তত অর্ধশত মানুষ উপস্থিত ছিলেন বলে জানান থানা সূত্র।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বলেন, ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি করেছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার ও প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তাকে মামলা করার নির্দেশ দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনকারী সংগঠনও অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে আসছিল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, ঘটনার পর অভিযুক্তের স্বামী নয়নকে সরকারি কোয়ার্টার ছাড়তে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয় এবং তারা ইতোমধ্যে কোয়ার্টার ছেড়েছেন। মামলা দায়েরের পর মূল আসামিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, সদ্য বদলি হওয়া ঈশ্বরদীর পূর্বতন ইউএনও সুবির কুমার দাশের পোষা কুকুরের বাচ্চাগুলো আবাসিক এলাকােই থাকার ব্যবস্থা করা ছিল। ঝিনাইদহে যোগদানের পর ছানাগুলো হত্যার খবর পেয়ে তিনি ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেন এবং গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
অভিযুক্ত নিশি রহমান দাবি করেন, কুকুরছানাগুলো তাদের বাসার সিঁড়ির পাশে বিরক্ত করত, তাই তিনি শুধু ব্যাগে ভরে পুকুরপাড়ে গাছের গোড়ায় রেখে আসেন-নিজে পানিতে ফেলেননি। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, সোমবার সকালে পুকুর থেকে একটি বস্তায় ভরা মৃত আটটি কুকুরছানা উদ্ধার করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাড়ির কেয়ারটেকার জানান, নয়নের সন্তান তাদের জানায়-নিশি রহমান ছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছানাগুলোর মৃতদেহের ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর শহরজুড়ে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয় এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তীব্র হয়। পুলিশ বলছে, ঘটনার তদন্ত দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নেওয়া হবে।
১০৩ বার পড়া হয়েছে