শ্রীলঙ্কায় ‘দিতওয়া’: বন্যা-ভূমিধসে মৃত্যু ৪১০, নিখোঁজ শতশত
বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৫:১০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
শ্রীলঙ্কায় ঘূর্ণিঝড় দিতওয়ার আঘাতে সৃষ্ট প্রবল বর্ষণ, বন্যা ও ভূমিধসে প্রায় এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
দেশজুড়ে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪১০ জনের প্রাণহানি নিশ্চিত করা হয়েছে, আর নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৩৩৬ জন।
দুর্যোগে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মধ্যাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকা। ক্যান্ডি জেলার আলওয়াতুগোদা গ্রামের বাসিন্দা নওয়াজ নাশরা স্মরণ করেন জীবনের সবচেয়ে আতঙ্কের রাতটির কথা। ভূমিধস যখন তাদের বাড়ি আঘাত হানে, তখন তিন বছর বয়সী কন্যাকে বিছানার চাদরে মুড়ে নিয়ে তিনি দৌড়ে বেরিয়ে আসেন। সঙ্গে ছিলেন তার গর্ভবতী বোন। অন্ধকারে হাঁটু-সমান কাদা মাড়িয়ে টানা ২০ মিনিট নিচে নেমে গ্রামের একটি মসজিদে আশ্রয় নেন তারা।
নাশরা বলেন, 'সবকিছু ছিল ঘুটঘুটে অন্ধকার। কেবল বজ্রপাতের মতো শব্দ শুনছিলাম। আমাদের চোখের সামনে পাশের বাড়িটা ধসে পড়ে। কাউকে সতর্ক করার মতো সময়ও পাইনি।'
স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে আলওয়াতুগোদা এলাকায় প্রায় ১০টি বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে, আর মৃতের সংখ্যা ২৫ ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশেও সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে একের পর এক প্রাণঘাতী ঝড় আঘাত হানছে। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে এসব ঝড়ে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডি অঞ্চলে এবারই সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে-এখানে ৮৮ জনের মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্ত এবং নিখোঁজ অন্তত ১৫০ জন। শুধুমাত্র এই অঞ্চলের ২০ হাজারের বেশি মানুষকে ১৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দেশব্যাপী মোট ১২ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত, আর নিখোঁজের সংখ্যা সরকারিভাবে ৩৩৬। ভূমিধসে চাপা পড়া মৃতদেহ উদ্ধারে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। ধ্বংসস্তূপ সরাতে বুলডোজারসহ ভারী যন্ত্রপাতি মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে বিচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ ও বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ স্বাভাবিক করতে কাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। প্রবল বাতাসে ঝড়ে এসব সেবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
১১৯ বার পড়া হয়েছে