বিজয়ের মাস শুরু, দেশজুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি
সোমবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩:০৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ডিসেম্বর শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে বিজয়ের মাসের আনুষ্ঠানিকতা। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বীরত্ব, আত্মত্যাগ ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতার স্মরণে দেশজুড়ে পালিত হবে বিভিন্ন কর্মসূচি।
এ উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারসহ রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যাপক আয়োজন গ্রহণ করেছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে বিজয় দিবস উদযাপনে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার বাণী গণমাধ্যমে প্রচার করা হবে। ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি ভবন, বিদেশে বাংলাদেশ মিশন ও দূতাবাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সঠিক নিয়মে পতাকা উত্তোলনের নির্দেশনা প্রচার করবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আলোকসজ্জার ব্যবস্থা থাকলেও ১৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে আলোকসজ্জা বন্ধ থাকবে। বিজয় দিবসের সকালে রাজধানীসহ সারাদেশে একত্রিশ বার তোপধ্বনি করা হবে। ভোরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বিদেশি কূটনীতিকরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হবে।
১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমাবেশ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। জেলা-উপজেলায় তিন দিনব্যাপী বিজয়মেলার পাশাপাশি শিশুদের জন্য রচনা, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিষয়ে আলোচনা সভা এবং প্রবাসীদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হবে। চট্টগ্রাম, খুলনা, মংলা, পায়রা, সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জ, বরিশালসহ বিভিন্ন বন্দর এলাকায় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ফুটবল, ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, কাবাডি, হা-ডু-ডুসহ নানা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। টেলিভিশন ও বেতারে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক অনুষ্ঠান প্রচার করা হবে। সিনেমা হলে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর পাশাপাশি জেলা-উপজেলায়ও উন্মুক্ত স্থানে চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে। জাদুঘর, বিনোদন কেন্দ্র ও পর্যটন এলাকায় শিশুদের জন্য বিনা টিকিটে প্রবেশের সুযোগ এবং বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
দেশের হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, ডে-কেয়ার ও বিভিন্ন কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে প্রীতিভোজের আয়োজন থাকবে। রাজধানীসহ বড় শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো সাজানো হবে জাতীয় পতাকা, ব্যানার ও ফেস্টুনে। ডাক বিভাগ বিজয় দিবস ২০২৫ উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করবে। দেশজুড়ে সব উপাসনালয়ে শহীদদের আত্মার শান্তি ও দেশের অগ্রগতি কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন হবে।
আগের দিন বিএনপি বিজয় মাস উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করলেও চেয়ারপার্সনের অসুস্থতার কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টি ও সহযোগী সংগঠনগুলো আলোর মিছিল এবং দেশজুড়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে বিজয়ের মাস শুরু করেছে।
১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ভোর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, মিরপুর ও রায়ের বাজার স্মৃতিসৌধে সফরসহ আলোচনা সভা এবং প্রার্থনার আয়োজন থাকবে।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে জমায়েত এবং সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত, নৃত্যকলা ও নাটক বিভাগের যৌথ উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। বিভিন্ন হল ও উপাসনালয়ে শহীদের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজনও থাকবে। পাশাপাশি প্রধান ভবনগুলোতে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হবে।
১১৩ বার পড়া হয়েছে