হংকংয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: ৯৪ জনের মৃত্যু, উদ্ধার অভিযান শেষ পর্যায়ে
শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ৪:১৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
হংকংয়ের উত্তরাঞ্চলীয় তাই পো এলাকার বিশাল আবাসন কমপ্লেক্স ‘ওয়াং ফুক কোর্ট’-এ আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৯৪ জনে।
শহরটিতে গত প্রায় ৮০ বছরের মধ্যে এটি সবচেয়ে মারাত্মক অগ্নিকাণ্ড। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস আজ শুক্রবার জানিয়েছে, তারা উদ্ধার অভিযান শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে এবং দিনের মধ্যে অভিযান সমাপ্ত করার আশা করছে।
আগুন লাগার সময় আটটি ভবন নিয়ে গড়া এই কমপ্লেক্সে ৪ হাজার ৬০০–র বেশি মানুষ বসবাস করতেন। সংস্কারকাজের কারণে পুরো ভবনজুড়ে বাঁশের মাচা এবং সবুজ নিরাপত্তা জাল টানানো ছিল-যা আগুনের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রধান কারণ বলে কর্মকর্তারা জানান।
ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক ডেরেক চ্যান বলেন, “আমরা সাতটি ভবনের প্রতিটি ইউনিটে প্রবেশ করে নিশ্চিত হচ্ছি যেন কেউ ভেতরে আটকে না থাকে।” তিনি জানান, উদ্ধার–সহায়তার জন্য করা ২৫টি ফোনকল এখনো অনিষ্পন্ন রয়েছে, যার মধ্যে সাম্প্রতিক তিনটি কল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখা হচ্ছে।
নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা বৃহস্পতিবার ভোরে ছিল ২৭৯, যদিও সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় এই সংখ্যা হালনাগাদ হয়নি। আটটি আশ্রয়কেন্দ্রে বর্তমানে প্রায় ৯০০ মানুষ অবস্থান করছেন।
বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, তীব্র তাপ, ধোঁয়া, ভেঙে পড়া মাচা ও ধ্বংসস্তূপ পেরিয়ে দমকলকর্মীদের ওপরের তলার আটকে পড়া বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছাতে হয়েছে। জ্যাকি কওক নামের একজন বাসিন্দা বলেন, “আশা করি আরও জীবিত মানুষকে খুঁজে পাওয়া যাবে। এমন বিপর্যয় কেউই চায়নি।”
একজন উদ্বিগ্ন মা আশ্রয়কেন্দ্রে তাঁর মেয়ের স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানের ছবি হাতে নিয়ে খোঁজ করছেন। তিনি জানান, তাঁর মেয়ে ও স্বামী দুজনই এখনও নিখোঁজ।
এ ঘটনায় অনিরাপদ নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। জানালায় দাহ্য ফোম বোর্ডসহ বিপজ্জনক উপকরণ ব্যবহারের কারণে আগুনের বিস্তার বাড়ে বলে পুলিশের ধারণা। রক্ষণাবেক্ষণকাজে যুক্ত নির্মাণপ্রতিষ্ঠান প্রেস্টিজ কনস্ট্রাকশনের দুই পরিচালক এবং এক প্রকৌশল পরামর্শককে অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট আইলিন চুং বলেন, 'আমাদের বিশ্বাস, কোম্পানির দায়িত্বহীনতার কারণেই আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে এবং এত বড় প্রাণহানি ঘটেছে।'
১৯৪৮ সালে হংকংয়ে এক গুদাম অগ্নিকাণ্ডে ১৭৬ জন মারা গিয়েছিলেন। তার পর থেকে এত বড় অগ্নিকাণ্ড আর ঘটেনি বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
১০৮ বার পড়া হয়েছে