নির্বাচনী ইশতেহার চূড়ান্ত করার কাজ করছে বিএনপি
বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ৮:৪২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ২৩৭টি আসনের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে গত ৩ নভেম্বর। এখন দলটি নির্বাচনী ইশতেহার চূড়ান্তকরণের কাজ চালাচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির চূড়ান্ত ইশতেহার গঠনে প্রধান ভূমিকা পালন করবে দলীয় ৩১ দফা, জুলাই জাতীয় সনদ এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা। এছাড়া ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লন্ডন থেকে দেওয়া বক্তব্যগুলোও ইশতেহারের মূল কাঠামোতে প্রতিফলিত হবে।
ইশতেহারে কেন্দ্রীয়ভাবে স্থান পাবে-গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, শাসন ব্যবস্থার সংস্কার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ, মানবাধিকার রক্ষা এবং দুর্নীতিবিরোধী কাঠামো শক্তিশালীকরণ। দলীয় নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন, জনগণের হাতে রাষ্ট্রের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া এবং প্রভাবমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা প্রধান অঙ্গীকার হবে।
৩১ দফার মূল বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে-অবাধ নির্বাচন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোট, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা, মানবাধিকার সুরক্ষা, বাকস্বাধীনতা, স্বচ্ছ প্রশাসন এবং জাতীয় অর্থনীতি পুনরুদ্ধার। এছাড়া নির্বাচনী ইশতেহারে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পূর্ণ স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা প্রদানের বিষয়ও গুরুত্ব পাবে।
দলীয় নির্বাচনী প্রচারেও নতুন কৌশল নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশাকে আলাদাভাবে টার্গেট করে প্রচার চালানো হবে। এ তালিকায় আলেম-ওলামা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, যুবক, কৃষক, নারী ও সিনিয়র সিটিজেন অন্তর্ভুক্ত।
ইশতেহারে কওমি মাদ্রাসা উন্নয়ন, ইসলামিক গবেষণা তহবিল গঠন, ধর্মীয় শিক্ষার আধুনিকায়ন এবং ধর্মচর্চার বাধাহীন পরিবেশ নিশ্চিতকরণে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সম্পত্তি রক্ষায় বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, নিরাপত্তা সেল এবং উৎসবে রাষ্ট্রীয় সহায়তা প্রদানসহ সাম্প্রদায়িক হামলা প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও থাকবে।
যুব সমাজের জন্য এক কোটি নতুন চাকরি, স্টার্টআপ ফান্ড, আইটি প্রশিক্ষণ, বিদেশে নতুন শ্রমবাজার ও মাদকবিরোধী টাস্কফোর্সের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। কৃষি ও কৃষককে গুরুত্ব দিয়ে কৃষি উপকরণের দাম কমানো, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা, কৃষিঋণ সহজ করা এবং ধান-চাল কেনার স্বচ্ছ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।
নারীর নিরাপত্তা, কর্মক্ষেত্রে সমান সুযোগ, নারী উদ্যোক্তা তহবিল, মাতৃত্বকালীন ভাতা বৃদ্ধি এবং সহিংসতা প্রতিরোধে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালও ইশতেহারের অংশ। পাশাপাশি ফ্যামিলি কার্ড, বয়স্ক ভাতা বৃদ্ধি, গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি থাকবে।
ভার্চুয়াল বার্তা, ভিডিও কনফারেন্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারেক রহমান নিয়মিত গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও রাষ্ট্রীয় সংস্কারের বিষয় তুলে ধরছেন। দলীয় সূত্র বলছে, ৩১ দফা, জুলাই সনদ ও শ্রেণিভিত্তিক প্রতিশ্রুতির সমন্বিত ইশতেহার নির্বাচনী প্রচারে নতুন গতি আনবে।
দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নির্বাচনের তপশিলের পর একটি বড় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ইশতেহার প্রকাশ করা হবে।
১০৭ বার পড়া হয়েছে