'জামায়াতকে ভোট দিলে জান্নাতে যাওয়া যাবে- এই কথা কোথায় লেখা আছে'
শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫ ৯:৫৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জামায়াত সম্পর্কে ‘জান্নাতের টিকিট’-সংক্রান্ত বক্তব্য ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের অপচেষ্টা। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, 'জামায়াতকে ভোট দিলে জান্নাতের টিকিট পাওয়া যাবে-এই কথা কোথায় লেখা আছে, তারা দেখিয়ে দিক।'
শনিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মাল্টিপারপাস হলে মসজিদভিত্তিক উপানুষ্ঠানিক শিক্ষক কার্যক্রম (মউশিক) কেয়ারটেকার কল্যাণ পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মীয় আবেগকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। 'এই ধরনের কথাবার্তা এখন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণের সামনে এসব পরিষ্কার করা জরুরি,' বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, স্বাধীনতার পর ইসলামী গণতান্ত্রিক লীগ (আইডিএল) হিসেবে রাজনীতিতে ফিরে আসতে জামায়াতকে সুযোগ করে দেন জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, 'আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করেছি, তারাও আমাদের সঙ্গে ছিল। কিন্তু গত ১০ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে তাদের কোনো দৃশ্যমান ভূমিকা দেখা যায়নি।'
তিনি অভিযোগ করেন, জামায়াতের কিছু অংশ ছাত্রলীগ ছদ্মবেশে রাজনৈতিক মাটিতে সক্রিয় ছিল বলে শোনা যায়-যদিও তিনি বিষয়টি নিশ্চিত নন।
ফখরুল দাবি করেন, আন্দোলনের কারণে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী মামলার শিকার, ২০ হাজারের বেশি দলীয় নেতা–কর্মী হত্যার শিকার এবং প্রায় ১,৭০০ জন গুম হয়েছেন। তিনি বলেন, 'আমরা সামনাসামনি লড়াই করেছি। ত্যাগের মাধ্যমেই পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।'
খালেদা জিয়ার দীর্ঘ কারাবাস এবং তারেক রহমানের দেশে ফিরতে না পারার বিষয়ও তিনি তুলে ধরেন।
প্রতিনিধিত্বমূলক অনুপাত (PR) পদ্ধতি নিয়ে একটি দল অযথা হৈচৈ করছে বলে মন্তব্য করেন ফখরুল। তাঁর ভাষায়, “অত বেশি হুংকার দেওয়ার পর এখন তারা নির্বাচনী প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। এটি জনগণের সঙ্গে অসঙ্গতি।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে মানুষ ‘ওয়ান ম্যান ওয়ান ভোট’ পদ্ধতিতেই অভ্যস্ত। গণভোটে চারটি প্রশ্ন রাখার প্রস্তাব জনগণকে বিভ্রান্ত করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগ আমলে মসজিদের খুতবা লিখে পাঠানোর অভ্যাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি। কিছু আলেমের আচরণে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, 'এ দেশের আলেমরা শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দিয়েছেন- এটি ভাবলে দুঃখ লাগে।'
ইসলামিক ফাউন্ডেশনে দলীয়করণ করে প্রতিষ্ঠানটির মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর মাওলানা শাহ্ মো. নেছারুল হক। বক্তব্য দেন পরিচালক (অব.) মুহাম্মদ রফিক উল ইসলামসহ অন্য অতিথিরা।
১৬০ বার পড়া হয়েছে