মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার এই রায়কে স্বাগত জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ৩:৪৪ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়কে 'ঐতিহাসিক' আখ্যা দিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেছেন, রায়টি প্রমাণ করেছে- ক্ষমতার অবস্থান যাই হোক, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও নির্যাতিত হাজারো মানুষের জন্য এই রায় গুরুত্বপূর্ণ হলেও সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আরও পদক্ষেপ প্রয়োজন। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, 'এই রায় শুধু আইনি সিদ্ধান্ত নয়; এটি সেই পরিবারগুলোর প্রতি এক ধরনের সম্মান, যারা এখনও প্রিয়জন হারানোর বেদনাকে বহন করে চলেছেন।'
তিনি বলেন, দীর্ঘ দমন-পীড়নের পর দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনর্গঠনের পথে। মামলায় আলোচিত অপরাধ- বিশেষ করে যুবক ও শিশুদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের নির্দেশ—রাষ্ট্র ও নাগরিকের মৌলিক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী গণঅভ্যুত্থানে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হন। তারা কেবল পরিসংখ্যান নয়, বরং ছাত্র, অভিভাবক এবং স্বাভাবিক অধিকারসম্পন্ন নাগরিক—উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা জানান, 'সাক্ষ্য–প্রমাণে উঠে এসেছে কীভাবে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর, এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালানো হয়েছিল। আদালতের রায় সেই ভোগান্তির স্বীকৃতি দিয়েছে এবং নিশ্চিত করেছে যে অপরাধীরা জবাবদিহির আওতায় আসবে।'
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ আবারও বৈশ্বিক ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির ধারায় নিজেদের স্থান শক্ত করছে। 'যে শিক্ষার্থী ও নাগরিকরা পরিবর্তনের আন্দোলনে উত্তাল ছিলেন, তারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন আমাদের ভবিষ্যতের জন্য।'
তবে তিনি মনে করেন, সামনে এগোতে শুধু আইনি প্রক্রিয়া যথেষ্ট নয়; রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের মধ্যে আস্থা পুনর্গঠন অপরিহার্য। তাঁর ভাষায়, 'মানুষ কেন সত্যিকার প্রতিনিধিত্বের জন্য জীবন বাজি রাখে-সেটি বুঝতে হবে এবং সেই আস্থার যোগ্য রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।'
বিবৃতির শেষে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'বাংলাদেশ সাহস ও বিনয়ের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং মানুষের সম্ভাবনার প্রতি অঙ্গীকার আমাদের ন্যায়বিচারকে টিকিয়ে রাখবে এবং আরও শক্তিশালী করবে।'
১০৮ বার পড়া হয়েছে