ধামরাইয়ে জমি বিরোধে ব্যবসায়ীর পা কেটে দিল সন্ত্রাসীরা
বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ৯:৪২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ঢাকার ধামরাই উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের মোড়ারচর এলাকায় জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. আলী হোসেন (৩৬) ভয়াবহ হামলার শিকার হয়েছেন।
এ ঘটনায় তার ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে প্রায় দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। বর্তমানে তিনি রাজধানীর সিটি কেয়ার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাজার থেকে ফেরার পথে মোড়ারচর এলাকার আওয়ালের চা ও মুদি দোকানের সামনে আলী হোসেনের পথরোধ করে আশিক, তৈয়ব, মামুন, মজিদ, শুকুর আলী, আজিজুল হক, রেজাউলসহ সানু মিয়া ও আরও কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
প্রথমে তারা আলী হোসেনকে রিকশা থেকে টেনে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এসময় আসামি আশিক ধারালো চাপাতি দিয়ে তার ডান পায়ে কোপ দেন, এতে পা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তৈয়ব লোহার রড দিয়ে বাম পায়ে আঘাত করলে হাড়ভাঙা জখম হয়। মামুন ও শুকুর আলী মাথা, বুক ও পিঠে আঘাত করেন এবং শ্বাসরোধের চেষ্টা চালান।
চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা হয়। পরে আহত আলী হোসেন ও তার স্ত্রীকে উদ্ধার করে প্রথমে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে গুরুতর অবস্থায় ঢাকার সিটি কেয়ার জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আলী হোসেনের স্ত্রী অঞ্জনা আক্তার বাদী হয়ে ধামরাই থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ইতোমধ্যে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করলেও বাকিরা পলাতক।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন,
“ঘটনার পরপরই মামলা হয়েছে। আমরা দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছি, অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।”
পরিবারের অভিযোগ, এর আগে গত ২২ মে একই বিবাদীদের হাতে আলী হোসেন হামলার শিকার হন। সে সময়ও থানায় মামলা হয়েছিল, কিন্তু অনেক আসামি এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং এখন নিয়মিত প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।
“গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের স্বজনরা নিয়মিত হুমকি দিচ্ছে—বাড়ি ছেড়ে না গেলে বা মামলা তুলে না নিলে খুন করে ফেলার ভয় দেখাচ্ছে।”
আলী হোসেনের পরিবারের দাবি, হামলাকারীরা এলাকায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। জমির মামলায় আলী হোসেন জিতে যাওয়ার পর থেকেই তারা প্রতিশোধ নিতে তৎপর হয়ে ওঠে।
আলী হোসেন বলেন, “জমি নিয়ে পাঁচটি মামলা ছিল, সবগুলোর রায় আমাদের পক্ষে এসেছে। এরপরই তারা হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। আমি বেঁচে গেছি, কিন্তু এখন প্রতিদিনই নতুন হুমকি পাচ্ছি।”
বর্তমানে পরিবারটি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বাইরে যেতে পারছেন না; বাজার-সদাইয়ের মতো কাজও এখন করতে হচ্ছে নারীদের।
১০৮ বার পড়া হয়েছে