ছেঁউড়িয়ায় লালন স্মরণোৎসব শুরু, ভক্তদের পদচারণায় মুখোর আখড়াবাড়ি

শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫ ৯:০৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মরমি সাধক, কবি ও মানবতাবাদী দার্শনিক ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবস আজ (১৭ অক্টোবর)। দিবসটি উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব। এবারের আয়োজনে প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ের স্বীকৃতি যুক্ত হয়েছে।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহায়তায় স্মরণোৎসব সফল করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে লালন একাডেমি। ইতোমধ্যে ছেঁউড়িয়ার আখড়া প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে উঠেছে দেশ-বিদেশ থেকে আসা বাউল, সাধু ও লালনভক্তদের পদচারণায়।
শুক্রবার বিকেলে আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। আগামী রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে বিভিন্ন আয়োজন।
এদিকে তিরোধান দিবসকে ঘিরে সপ্তাহখানেক আগে থেকেই হাজারো লালন অনুসারী ছেঁউড়িয়ায় ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। কালী নদীর তীরে বসেছে ঐতিহ্যবাহী লালন মেলা। বিশাল মাঠজুড়ে তাবু গেড়ে ভক্তরা গাইছেন লালনের অমর বাণী-একতারা-দোতারার তালে চলছে ভাবগান ও সাধনা।
মাঠের দক্ষিণ পাশে তৈরি করা হয়েছে মূল মঞ্চ, যেখানে প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা ও সংগীত পরিবেশনা। উত্তরে বসেছে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর দোকান। পাশাপাশি সমাধির পাশের উন্মুক্ত শেডে ভক্তরা সারারাত ধরে লালনের গান ও দর্শনচর্চায় মগ্ন থাকছেন।
স্থানীয় অনুসারী ফারুক সাধু বলেন, ‘আমরা এখানে আসি সাঁইজির মর্মবাণী চর্চা ও ভক্তদের সঙ্গে ভাব বিনিময়ের জন্য। এটাই আমাদের আত্মিক তৃপ্তি।’
লালন একাডেমি সূত্রে জানা যায়, ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পয়লা কার্তিক ফকির লালন সাঁই দেহত্যাগ করেন। সেই থেকে প্রতিবছর তার স্মরণে আয়োজন করা হচ্ছে এই উৎসব।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, ‘প্রতিদিন রাতে মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা ও লালন সংগীত পরিবেশনা। এতে অংশ নেবেন দেশবরেণ্য লালন শিল্পীরা।’
তিনি আরও জানান, উৎসব নির্বিঘ্ন করতে আখড়াবাড়ী ও আশপাশের এলাকায় নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার।
‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’-ফকির লালনের এই চিরন্তন বাণীকে ধারণ করেই এবারের জাতীয় লালন স্মরণোৎসব উদযাপিত হচ্ছে।
১১৮ বার পড়া হয়েছে