রাজশাহীর বাগমারায় ৪ সরকারি খাদ্যগুদামে পচা চাল, ওসি বরখাস্ত

শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৮:৩৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
দুর্গাপুরের পর এবার রাজশাহীর বাগমারার চারটি সরকারি খাদ্যগুদামে বিপুল পরিমাণ খাওয়ার অনুপযোগী ও নিম্নমানের চাল পাওয়া গেছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) অভিযান চালিয়ে এসব গুদাম সিলগালা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম।
গুদামে পচা চাল সংরক্ষণের অভিযোগে ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-এলএসডি) বাচ্চু মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে নমুনা সংগ্রহ করে চালের মান পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ইউএনও মাহবুবুল ইসলাম জানান, “গুদামে রাখা চালগুলো এতটাই নিম্নমানের যে তা মানুষের খাওয়ার উপযোগী নয়। এগুলো মূলত পশুখাদ্য বা মাছের ফিড হিসেবে ব্যবহারের যোগ্য। সরকারের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়।”
বাগমারার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌর এলাকায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় বিতরণের জন্য ভবানীগঞ্জ গুদাম থেকে চাল সরবরাহ করা হচ্ছিল। বিতরণের সময় উপকারভোগীরা চালের নিম্নমান নিয়ে অভিযোগ করলে প্রশাসনের নজরে আসে বিষয়টি।
এ বিষয়ে বাগমারা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নবী নওয়াজেস আমিন বলেন, “গুদামে কী পরিমাণ খারাপ চাল রয়েছে, তা পরীক্ষার পরই নিশ্চিতভাবে বলা যাবে। তবে পুরো জেলায় মাত্র একজন রসায়নবিদ থাকায় সকল গুদামের চাল পরীক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।”
এদিকে অভিযুক্ত ওসি-এলএসডি বাচ্চু মিয়া দাবি করেছেন, “ট্রাকে আসা শত শত বস্তা চাল থেকে এক বা দুইটি নমুনা বস্তা পরীক্ষা করা হয়। সব চাল ভালো না খারাপ—তা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।” তবে তিনি আরও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২৬ আগস্ট জেলার দুর্গাপুর উপজেলা খাদ্যগুদামে অভিযান চালিয়ে ১৩২ বস্তা পচা চাল জব্দ করা হয়েছিল। ওই ঘটনায়ও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
রাজশাহী জেলার ১২টি সরকারি খাদ্যগুদামে প্রতি মাসে প্রায় ৯৮ হাজার উপকারভোগীর মাঝে চাল বিতরণ করা হয়। একের পর এক গুদামে নিম্নমানের চালের খোঁজ মেলায় জেলার সব গুদামে থাকা মজুত চালের মান যাচাইয়ের দাবি জানিয়েছেন উপকারভোগীরা।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওমর ফারুক জানিয়েছেন, “বিষয়টি তদন্তে জেলা খাদ্য বিভাগ একটি কমিটি গঠন করেছে। পাশাপাশি, খারাপ চাল সরিয়ে ভালো চাল সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
১৬০ বার পড়া হয়েছে