ছয় ছাত্রনেতার প্রেস ব্রিফিং ছিল জোরপূর্বক: সাবেক আইজিপি

মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:২৬ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় জন শীর্ষ সমন্বয়ককে আটক করে নির্যাতনের মাধ্যমে পূর্বপরিকল্পিত প্রেস ব্রিফিং করানো হয়েছিল বলে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
তিনি দাবি করেন, একটি বিশেষ বাহিনীর নির্দেশেই এ কাজ করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন প্যানেলের সামনে রাজসাক্ষী হিসেবে এসব তথ্য তুলে ধরেন মামুন।
জবানবন্দিতে কী ছিল?
সাবেক আইজিপি মামুন তার জবানবন্দিতে বলেন,
“২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর পুলিশ বাহিনীতে রাজনৈতিক প্রভাব চোখে পড়ার মতোভাবে বেড়ে যায়। একাধিক কর্মকর্তা সরাসরি রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগে ছিলেন।”
তিনি অভিযোগ করেন,
প্রায় প্রতি রাতেই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসভবনে "কোর কমিটির" নামে গোপন বৈঠক হতো। এসব বৈঠকে নিয়মিত অংশ নিতেন তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) মনিরুল ইসলাম, ডিআইজি নুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত ডিআইজি বিপ্লব কুমার, এএসপি কাফী, ওসি মাজহার এবং ফোরকান অপূর্বসহ আরও অনেকে। তাদের মধ্যে কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
আন্দোলন দমন নিয়ে কী বললেন মামুন?
মামুন বলেন,
“আন্দোলনকারীদের দমন করতে ‘মারণাস্ত্র ব্যবহার’, হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়া এবং ব্লক রেইডের মতো সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবে গৃহীত হয়েছিল। এসব সিদ্ধান্তের উৎস ছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।”
তিনি আরও যোগ করেন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান ও ডিবি প্রধান হারুন ছিলেন এই সহিংস কৌশল ব্যবহারে সবচেয়ে আগ্রহী।
রাজসাক্ষীদের জবানবন্দিতে কী উঠে এসেছে?
এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৫ জন সাক্ষী জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের বক্তব্যে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে দেশজুড়ে সংঘটিত সহিংস অভিযান, হত্যাকাণ্ড এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে। শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
এর আগে গত ১০ জুলাই, একই মামলায় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন সাবেক আইজিপি মামুন নিজেই।
১৩৩ বার পড়া হয়েছে