সর্বশেষ

সারাদেশ

উত্তরের অগ্রযাত্রা: ‘মওলানা ভাসানী সেতু’র উদ্বোধন, গাইবান্ধা-কুড়িগ্রাম যুক্ত

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫ ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
উত্তরবঙ্গের দুই জেলার মানুষদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলো ‘মওলানা ভাসানী সেতু’।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ও কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার মধ্যকার তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি আজ বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।

উদ্বোধনের পরপরই সেতুর প্রবেশপথে ফিতা কেটে এর দ্বার উন্মোচন করা হয়। এরপর হাজারো মানুষ সেতুতে উঠে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন, তোলেন স্মরণীয় মুহূর্তের ছবি। ভিড় সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাখতে হয়েছে সতর্ক অবস্থান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, এলজিইডি ও সেতু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সেতু এলাকায় সকাল থেকেই তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। বহু মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে আসেন ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের সাক্ষী হতে।

২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। দীর্ঘ এক দশকের নানা জটিলতা পেরিয়ে আজ বাস্তবে রূপ পেল সেই স্বপ্ন।

এলজিইডির তথ্য অনুযায়ী, ৮৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সৌদি অর্থায়নে এবং চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়েছে ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ ও ৯.৬ মিটার প্রশস্ত পিসি গার্ডার এই সেতুটি। এটি এলজিইডি বাস্তবায়িত সবচেয়ে বড় অবকাঠামোগত প্রকল্প। সেতুর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে প্রায় ৮০ কিলোমিটার এক্সেস সড়ক, ৫৮টি বক্স কালভার্ট ও ৯টি আরসিসি সেতু।

এর ফলে গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের অন্তত ১০টি বাজার ও জনপদ সরাসরি সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত হলো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেতুটি উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ সঞ্চার করবে। কৃষিপণ্য ও শিল্পপণ্য পরিবহনে খরচ কমবে, বাড়বে কর্মসংস্থান ও শিল্পায়নের সুযোগ। ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে, ভুরুঙ্গামারী স্থলবন্দরের দূরত্ব কমবে ৪০ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

তবে সেতুর নামকরণ নিয়ে রয়েছে মতবিরোধ। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, ১৯৯৫ সাল থেকে সেতু বাস্তবায়নের আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত মুক্তিযোদ্ধা শরিতুল্যাহ মাস্টারের নামেই এটি নামকরণ হওয়া উচিত ছিল। এ নিয়ে তারা মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করলেও সরকার ১০ আগস্ট প্রজ্ঞাপন জারি করে সেতুর নাম দেয় ‘মওলানা ভাসানী সেতু, গাইবান্ধা’।

নামকরণ বিতর্ক পেছনে রেখে দুই জেলার মানুষের মুখে এখন শুধুই আনন্দের ছাপ। দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের বাস্তব রূপ পেয়ে নতুন প্রত্যাশা নিয়ে এগিয়ে যেতে চায় উত্তরের জনপদ।

১৮২ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন