দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পেলেন ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী

রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫ ৩:৪০ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সফল ট্রেজারার ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনে কেস টু কেস ভিত্তিতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের জন্য বিজ্ঞ আইনজীবী হিসেবে ১৮ জনকে মনোনয়নের সুপারিশ করা হয়।
বিজ্ঞ আইনজীবীদের এই তালিকার প্রথমেই রয়েছে রাগীব রউফ চৌধুরী, পিতা- মৃত আব্দুর রউফ চৌধুরী। এছাড়া আরো আছেন খান মোহাম্মদ মইনুল হাসান, পিতা হাসান আলী খান, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, পিতা- মৃত মোহাম্মদ ইসমাইল, কাজী মোহাম্মদ জয়নাল আবেদিন, পিতা- কাজী মোহাম্মদ আবুল হাসেন, মোঃ কামরুজ্জামান (কচি), পিতা- মৃত মোঃ জহুরুল হক, ব্যারিস্টার এম, সরোয়ার হোসাইন, পিতা- আঃ হাকিম হাওলদার, ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান (মিলন), পিতা- মনসুর রহমান, মোঃ আরিফুল ইসলাম, পিতা- মোঃ মফিজ উদ্দিন, ব্যারিস্টার বিভূতি তরফদার, পিতা- রামহরি তরফদার, মাহমুদুল আরেফিন (স্বপন), পিতা- ইয়াহিয়া, এস, এম, ইকবাল বাহার ভুইয়া, পিতা- শেখ আহমেদ ভুইয়া, মোঃ সাইফুল মালেক চৌধুরী, পিতা- মৃত মোঃ আবুল কাশেম, মোঃ কামাল হোসাইন, পিতা- আঃ মালেক, ব্যারিস্টার এ, এস, এম, সাজ্জাদ হায়দার, পিতা- আবু বকর বিশ্বাস, ব্যারিস্টার শাহীন আহমেদ, পিতা- এম, এ, লতিফ, মোঃ আসিফ হাসান, পিতা- মৃত আব্দুর রশিদ, মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম বাঁধন, পিতা- মোঃ সায়েকুল ইসলাম এবং ব্যারিস্টার শাহজাদা আল আমিন, পিতা- লোকমান আহমেদ।
কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলার কৃতি সন্তান ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী মানবতা, ন্যায়বিচার ও সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতি অবিচল আস্থাশীল এক স্বপ্নবান, প্রজ্ঞাবান ও দূরদর্শী ব্যক্তিত্ব। তাঁর চিন্তা, চেতনা ও কর্মপ্রবাহের কেন্দ্রবিন্দুতে সর্বদাই থাকে মানুষের কল্যাণ। বর্তমান সমাজের বিভিন্ন সংকটের মধ্যেও তিনি সাহসের সাথে তরুণ প্রজন্মকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে একজন আদর্শিক ও নৈতিক পথপ্রদর্শক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
তার পিতা, ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত আব্দুর রউফ চৌধুরী, ছিলেন একজন নিঃস্বার্থ ও দূরদর্শী রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, আইয়ুব বিরোধী সংগ্রাম ও ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে সাহসিকতার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ছাত্র রাজনীতিতে তিনি কুষ্টিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। আশির দশকে তিনি সাতদলীয় জোটের অন্যতম নেতা ছিলেন এবং ১৯৯১ সালে বিএনপিতে যোগ দিয়ে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর পরিকল্পনায় মিরপুর-ভেড়ামারার রাস্তাঘাট, শিক্ষা ও ধর্মীয় অবকাঠামো ব্যাপক উন্নয়ন লাভ করে।
তার মাতা, মরহুমা অ্যাডভোকেট নার্গিস চৌধুরী, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করেছেন এবং এনজিও "পালক"-এর মাধ্যমে অসংখ্য নারীকে আইনি সহায়তা প্রদান করেছেন। চৌধুরী পরিবারের জনকল্যাণমূলক চেতনার ধারাবাহিকতায় মরহুমা মাহমুদা চৌধুরীর নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়, যা এনামুল হক খান চৌধুরীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে ওঠে। মিরপুর অঞ্চলের সামাজিক ও শিক্ষাসহ অবকাঠামো উন্নয়নে চৌধুরী পরিবারের অবদান গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়।
ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী কেবল পারিবারিক ঐতিহ্যের উত্তরসূরি নন, তিনি নিজ গুণ, শিক্ষা ও নেতৃত্বগুণে একজন দক্ষ, মানবিক ও প্রগতিশীল নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি কুষ্টিয়া জিলা স্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি, এরপর আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তারপরে তিনি যুক্তরাজ্যের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং লন্ডনের লিংকনস ইন থেকে বার-অ্যাট-ল ডিগ্রি লাভ করেন।
২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিপুল ভোটে কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন। টানা ২৩ বছর আইন পেশায় কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সম্প্রতি দেশের সর্বোচ্চ আদালত তাঁকে “সিনিয়র অ্যাডভোকেট” উপাধিতে ভূষিত করে। দেশের প্রায় ৮০ হাজার আইনজীবীর মধ্যে মাত্র কয়েকশ’জন এই বিরল সম্মানে ভূষিত হয়েছেন, যা তাঁর পেশাদারিত্ব, মেধা ও সততার স্বীকৃতি।
সামাজিক ও মানবিক কাজে তাঁর সক্রিয়তা প্রশংসনীয়। তিনি রোটারী ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্টের অ্যাডিশনাল গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং নানা সামাজিক কর্মসূচিতে নিঃস্বার্থভাবে অংশগ্রহণ করে চলেছেন। এসব অর্জন তাঁকে একজন বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর জাতীয় নির্বাহী কমিটির একজন দায়িত্বশীল সদস্য। দলের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা কেবল রাজনৈতিক নয়, বরং তিনি আইনি লড়াইয়ে নির্ভরতার প্রতীক। গত সতেরো বছর ধরে ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে দল ও নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে নিরবচ্ছিন্ন আইনি সহায়তা দিয়ে চলেছেন। তাঁর এই নীরব সংগ্রাম ও দায়বদ্ধতা শুধু আইনি ক্ষেত্রে নয়, বরং মানবিক মূল্যবোধ ও রাজনৈতিক আদর্শের এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ও স্থানীয় উদ্যোগে তিনি নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন। তাঁর নেতৃত্বে ও উপস্থিতিতে দলীয় ও গ্রামীণ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সক্রিয়ভাবে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বিশ্বাস করেন, রাজনীতিতে বিভেদ নয়, ঐক্য ও সমন্বয় প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। তিনি বলেন, দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা ব্যক্তিগত লোভের বিষয় নয়, বরং সাংগঠনিক অধিকার। তবে সর্বদা দলীয় সিদ্ধান্তকে অগ্রাধিকার দেন।
কুষ্টিয়া-২ আসন পুনরুদ্ধারের জন্য দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তিনি বলেন, দলীয় ঐক্য, গণতান্ত্রিক সংগ্রাম ও জনগণের ভালোবাসা এই লক্ষ্য অর্জনের মূল চাবিকাঠি। তাঁর সরব উপস্থিতি ও গণসংযোগের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের আস্থা আরও বাড়ছে। তরুণ, প্রবীণ ও সাধারণ মানুষ তার ভবিষ্যতের নেতৃত্বের আশায় এগিয়ে আসছেন।
আইনের সঠিক প্রয়োগ, সুশাসন ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি মানবিক ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি মনে করেন, গ্রামীণ অর্থনীতি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, নারীর ক্ষমতায়ন ও আধুনিক অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব। ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষায় তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ।
তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণে তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। মেধা, শ্রম ও উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগিয়ে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেন। তরুণদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও উদ্যোক্তা হওয়ার পথ সুগম করাই তাঁর অগ্রাধিকার।
রাজনীতি ও আইনের ক্ষেত্রে তাঁর দক্ষতা প্রশংসনীয় হলেও ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি একান্তভাবে আদর্শ ও সততার প্রতীক। তার চিন্তা, কর্মকৌশল ও নেতৃত্বে রয়েছে সাহস, আদর্শ ও সময়োপযোগী বাস্তবতা। তিনি বিশ্বাস করেন, সৎ নেতৃত্ব ছাড়া একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
আজ তিনি কেবল একজন দক্ষ আইনজীবী বা রাজনীতিক নন, ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়ার একজন আশাবাদী নেতৃত্বের প্রতীক। তার দৃঢ় মনোভাব, আদর্শ ও অঙ্গীকারে সমাজে থাকছে অনুপ্রেরণা ও আশা।
১৯২ বার পড়া হয়েছে