লিভার ক্ষতির ইশারা দিচ্ছে ত্বক? জেনে নিন ৯টি লক্ষণ

রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫ ৮:৪২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ফ্যাটি লিভার বা নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) এখন বিশ্বজুড়ে দ্রুত বাড়ছে। লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমে গেলে নানা জটিলতা তৈরি হতে পারে।
কিন্তু এই রোগের লক্ষণ শুধুমাত্র পেটের ভেতরে সীমাবদ্ধ থাকে না—ত্বকেও তার প্রভাব পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ত্বকের কিছু নির্দিষ্ট পরিবর্তন লিভারের সমস্যা বা কার্যক্ষমতা কমার পূর্বাভাস দিতে পারে। তাই সময়মতো এগুলো চিহ্নিত করে চিকিৎসা শুরু করলে ফ্যাটি লিভারের জটিলতা কমানো সম্ভব।
চলুন জেনে নেই, ত্বকে কোন কোন লক্ষণ ফ্যাটি লিভারের সম্ভাবনা নির্দেশ করে:
১. জন্ডিস (ত্বক ও চোখ হলদে হয়ে যাওয়া):
লিভারের কাজ বাধাগ্রস্ত হলে রক্তে বিলিরুবিন জমে চোখ ও ত্বক হলুদাভ হয়ে যায়। এটি লিভারের সমস্যার অন্যতম প্রধান লক্ষণ।
২. ত্বকের রঙের পরিবর্তন:
ফ্যাটি লিভারজনিত সিরোসিসে দেখা যায় মুখে মলিন বা হলদে ছোপ, হাত-পায়ে গাঢ় দাগ এবং আয়রন জমে ত্বকের রঙে ভিন্নতা।
৩. সহজে ক্ষত ও রক্তপাত:
লিভার রক্ত জমাট বাঁধার জন্য প্রোটিন তৈরি করে। লিভারের সমস্যা হলে প্রোটিন কমে সামান্য আঘাতেও রক্তপাত হতে পারে।
৪. শরীরে ফোলা (অ্যাসাইটিস ও এডিমা):
লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে শরীরে তরল জমা হয়, যা পেটে (অ্যাসাইটিস) ও পা-গোড়ালে (এডিমা) ফোলাভাব সৃষ্টি করে।
৫. এরাপটিভ জ্যান্থোমা (হলুদ রঙের ছোট গাঁট):
লিভার চর্বি প্রসেস করতে না পারায় রক্তে চর্বির পরিমাণ বাড়লে ত্বকে ছোট হলুদ দানা বা গাঁট দেখা দেয়।
৬. চুলকানি (প্রুরিটাস):
লিভারের সমস্যায় রক্তে পিত্ত পদার্থ জমে ত্বকে চুলকানি তৈরি হয়, যা প্রদাহজনিত রাসায়নিকের কারণে আরও বাড়তে পারে।
৭. স্পাইডার ভেইনস (মাকড়সার জালের মতো শিরা):
ত্বকের নিচে বিশেষ করে শরীরের উপরের অংশে ছোট ছোট লাল শিরা দেখা যায়, যা লিভারের হরমোন ভারসাম্যহীনতার কারণে হয়।
৮. জ্যান্থেলাজমা (চোখের চারপাশে হলুদ ছোপ):
চোখের আশেপাশে কোলেস্টেরল বা চর্বিযুক্ত হলুদ দাগ ফ্যাটি লিভারের ইঙ্গিত দেয়, যা সাধারণত মধ্যবয়সী নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
৯. পামার ইরিথিমা (হাতের তালু লাল হওয়া):
হাতের তালু ও আঙুলের ডগায় লালচে ভাব দেখা গেলে তা লিভারের হরমোন ও রক্তপ্রবাহ পরিবর্তনের লক্ষণ হতে পারে।
ত্বকে এই ধরনের যেকোনো পরিবর্তন বা সমস্যা দেখা দিলে তা হালকা করে না নিয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ফ্যাটি লিভার প্রথম দিকে ধরা পড়লে সঠিক চিকিৎসা ও জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তাই ত্বকের সংকেতগুলোকে অবহেলা করবেন না—এগুলো লিভারের ক্ষতির প্রথম পরিচায়ক হতে পারে।
১২০ বার পড়া হয়েছে