বিহারে ডাইনি সন্দেহে একই পরিবারের ৫ জনকে পুড়িয়ে হত্যা

মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫ ৭:১৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ভারতের বিহার রাজ্যের পূর্ণিয়া জেলার তেতগামা গ্রামে 'ডাইনি বিদ্যা' বা কালোজাদুর অভিযোগ তুলে এক পরিবারের পাঁচ সদস্যকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনার পর নিহতদের মরদেহেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
রবিবার (৬ জুলাই) রাতে ঘটে যাওয়া এ বর্বর ঘটনায় পুরো এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতরা ওরাঁও আদিবাসী সম্প্রদায়ের সদস্য। ঘটনার সময় পরিবারের ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর আত্মীয়ের বাড়িতে থাকায় প্রাণে বেঁচে যায়। পরে সেই কিশোরই পুলিশে খবর দেয় এবং চারজনের নাম উল্লেখ করে। পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে, চতুর্থজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, লোকজ ঝাড়ফুঁক বা ঝাড়ফুঁকের চিকিৎসা নিয়ে গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। নিহত বাবুলাল ওরাঁও ওই ধরনের চর্চা করতেন বলে অভিযোগ। কিছুদিন আগে একই গ্রামের এক শিশুর মৃত্যু এবং অন্য একজনের অসুস্থতার জন্য বাবুলালের পরিবারকে দায়ী করা হয়। এরপরই এই হামলার ঘটনা ঘটে।
পূর্ণিয়ার সাব-ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার (এসডিপিও) পঙ্কজ কুমার শর্মা বলেন, “পাঁচজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাদের জীবন্ত অবস্থায় পুড়ানো হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই ঘটনায় পুরো গ্রামেরই সম্পৃক্ততা রয়েছে।”
ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “পূর্ণিয়ায় একই পরিবারের পাঁচজনকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিহারে আইনের শাসন ভেঙে পড়েছে, কেউ জবাবদিহি করছে না।”
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রাজেশ রঞ্জন বলেন, “আমরা যখন মঙ্গলে পা রাখছি, তখন একই সঙ্গে মানুষের মধ্যে কুসংস্কারের নামে গণহত্যা চালানো হচ্ছে এটি অত্যন্ত লজ্জার।”
বিহার কংগ্রেস সভাপতি রাজেশ কুমার বলেন, “এই রাজ্যে গরিব, দলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী কেউই নিরাপদ নয়। এটা জঙ্গলরাজের জ্বলন্ত প্রমাণ।”
১১৮ বার পড়া হয়েছে