নূরুল হুদাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে চায় পুলিশ

সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫ ৯:০৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
২০১৮ সালের আলোচিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘রাতের ভোট’সহ নানা অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৩ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শামসুজ্জোহা সরকার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এই আবেদন করেন। আদালত সূত্র জানায়, বিকেলে এই আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে নূরুল হুদাকে বের করে একদল লোক জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করে। পরে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর পুলিশ জানায়, বিএনপির করা একটি মামলায় নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাউল হক জানান, বিএনপি ওইদিন একটি মামলা করে, যেখানে সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ মোট ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপি এবং জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
রিমান্ড আবেদনে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মোট ১১টি কারণ উল্লেখ করা হয়। এসব কারণে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও নূরুল হুদা একটি সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যর্থ হন। এতে দেশ এক গভীর রাজনৈতিক সংকটে পড়ে।
তদন্ত কর্মকর্তা দাবি করেন, তিনি প্রশাসনকে একপক্ষীয়ভাবে ব্যবহার করে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন এবং নিজের শপথ ভঙ্গ করেছেন। নির্বাচনের নামে দিনের ভোট রাতে সম্পন্ন করার মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া সরকারি আদেশ ও সাংবিধানিক ক্ষমতা অপব্যবহার করে তরুণ সমাজের ভোটে অনীহা তৈরি ও গণতান্ত্রিক ধারা ক্ষতিগ্রস্ত করার কথাও উঠে এসেছে রিমান্ড আবেদনে।
আরও বলা হয়, নূরুল হুদা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় আনার লক্ষ্যে ভুয়া গেজেট প্রকাশ এবং নির্বাচনী ফলাফল পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করেছেন। তিনি কত টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন এবং কার পরামর্শে এসব করেছেন, তা উদঘাটনের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। একইসঙ্গে পাতানো নির্বাচনের নেপথ্য কুশীলবদের চিহ্নিত করার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ জরুরি বলেও দাবি করেছে পুলিশ।
রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, মামলার পলাতক ও অজ্ঞাতনামা অন্যান্য আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে নূরুল হুদার জবানবন্দি গুরুত্বপূর্ণ।
এর আগে রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে স্থানীয় জনতা নূরুল হুদাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে জুতার মালা পরিয়ে অপমান করে।
১২৫ বার পড়া হয়েছে