তেল আবিবে রেড এলার্ট

সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫ ৭:০৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গত ১৩ জুন মধ্যরাতে ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ব্যাপক বিমান হামলা চালায়। এতে ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদের মৃত্যু হয় এবং তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান সরাসরি ইসরায়েলের মূল ভূখণ্ডে, বিশেষ করে তেল আবিব, হাইফা ও আশেপাশের শহরে একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।
ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আঘাতে তেল আবিব মহানগর এলাকায় অন্তত সাতটি স্থানে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ২১ জন আহত হন, যাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর। শহরের ছয়টি ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায় এবং বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়েন। হামলার সময় শহরজুড়ে রেড এলার্ট সাইরেন বাজানো হয় এবং বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়।
তেল আবিবের আকাশে ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় থাকলেও হামলার ব্যাপকতায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। শহরের রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়, অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি সেবা সংস্থা দ্রুত আহতদের উদ্ধার ও চিকিৎসায় নেমে পড়ে।
ইরান তাদের অভিযানের নাম দিয়েছে ‘আলী ইবনে আবি তালিব’ বা ‘ট্রু প্রমিজ-থ্রি’। পাল্টা হামলার অংশ হিসেবে ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের তিনটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে এবং দুইজন ইসরায়েলি পাইলটকে আটক করেছে। ইসরায়েলও ইরানে হামলা অব্যাহত রেখেছে এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জরুরি বাংকারে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
ইরান হুমকি দিয়েছে, কেউ ইসরায়েলকে সহায়তা করলে তাদের সামরিক ঘাঁটিতেও হামলা চালানো হবে। হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরান, যার ফলে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্ব নেতারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সবাই সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন এবং পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার ঘটনায় বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তেল আবিবে রেড এলার্ট ও ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন যুদ্ধের দ্বার উন্মুক্ত করেছে। পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তনশীল, এবং আন্তর্জাতিক মহলের নজর এখন ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ওপর।
১২২ বার পড়া হয়েছে