নওগাঁয় তীব্র শীতে দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষ বিপাকে
রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:২৩ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
নওগাঁয় পৌষ মাসের শুরু থেকেই শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনের অধিকাংশ সময় সূর্য দেখায় না, কুয়াশা ও হিম বাতাসে জনপদের মানুষ জবুথুবু অবস্থায় রয়েছে।
বিশেষ করে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষরা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। শীতে পেটের তাগিদে বাইরে বের হলেও অনেকেই কাজ না পেয়ে শূন্য হাতে ফিরে যাচ্ছেন।
আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল শতভাগ। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জেলা। গত কয়েকদিনে তাপমাত্রা ১১ থেকে ১২ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভোরের দিকে গ্রাম থেকে আসা শ্রমিকরা মুক্তির মোড়, ব্রিজের মোড় ও শিবপুর ব্রিজ (বাইপাস) এলাকায় কাজের সন্ধানে জড়ো হয়েছেন। এরা মাটি কাটার ঝুঁড়ি ও কোদাল হাতে নিয়ে বসে থাকেন। তবে শীতের কষ্ট ও কাজ না পাওয়ার দুঃখে অনেকেই শূন্য হাতে ফিরে যাচ্ছেন।
মুক্তির মোড়ে বসে থাকা ৭০ বছর বয়সী আবুল কাশেম বলেন, 'মাঝে কিছুদিন শীত কম ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরেই প্রচণ্ড শীত পড়েছে, সঙ্গে বাতাসও বইছে। শীত উপেক্ষা করে বাইরে বের হলেও সর্দি-কাশি লাগে। আমরা তো দিন আনা, দিন খাওয়ার মানুষ। আয় কমে যাওয়ায় খুব সমস্যায় পড়েছি।'
অন্য শ্রমিক তছলিম বলেন, 'ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীত। সাইকেল নিয়ে বের হলে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। গরিব মানুষ, কাজ না করলে চলতে পারি না। শীতে যত কষ্টই হোক, কাজ করতে হয়। গত দুই দিন কোনো কাজ পাইনি, এসে ঘুরেই ফিরে যাই।'
৬৫ বছর বয়সী হাজের আলী জানান, 'রোদসহ বিভিন্ন পরিবেশের ওপর আমাদের কাজ পাওয়া নির্ভর করে। শীতের শুরুতে কাজ পাওয়া কমে গেছে। পারিশ্রমিক কম হলেও কাজ পাওয়ার চেষ্টা করি। কেউ কাজ পায়, কেউ পায় না। কাজ না পেলে বাড়ি ফিরে বসে থাকতে হয়।'
এদিকে, নওগাঁ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অসহায় দিনমজুর ও ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নওগাঁ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসার মোঃ আশেকুর রহমান জানান, প্রতিটি উপজেলায় অসহায় ছিন্নমুল দিনমজুরদের মধ্যে গরম কাপড় বিতরণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ৬ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলায় মোট ১১ উপজেলায় এভাবে ৬৬ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। এছাড়া ৭,৫০০ পিস কম্বলও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং বিতরণের প্রক্রিয়া চলছে।
১১৫ বার পড়া হয়েছে