শীত ও ঘন কুয়াশায় টাঙ্গাইলে জনজীবন বিপর্যস্ত, সড়ক ও নৌপথে ধীরগতি
শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৫:৪৯ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
পৌষের মাঝামাঝি সময়ে তীব্র শীতের সঙ্গে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে টাঙ্গাইলের দিগন্ত। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোররাত থেকেই জেলা শহরসহ টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার সড়ক-মহাসড়ক ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
এতে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি সড়ক ও নৌপথে যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তি দেখা দেয়।
সকাল থেকে যমুনাসেতু–টাঙ্গাইল–ঢাকা মহাসড়কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলাচল ধীরগতিতে চলে। কুয়াশার তীব্রতায় দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় চালকদের হেডলাইট জ্বালিয়ে সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। ফলে দূরপাল্লার বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকগুলো গন্তব্যে পৌঁছাতে কয়েক ঘণ্টা বিলম্ব হচ্ছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ মোড়গুলোতে পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।
ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী নাদের পরিবহনের চালক সুমন মিয়া জানান, ভোর থেকেই স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি কুয়াশা পড়েছে। সামনে কী আছে তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না, ফলে গাড়ি চালাতে চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। একই অভিজ্ঞতার কথা জানান পাবনাগামী ট্রাকচালক আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পূর্ব অংশে সড়ক নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় কুয়াশার মধ্যে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বেড়ে গেছে।
যমুনা নদীবেষ্টিত ভূঞাপুর ও কালিহাতী উপজেলার বিভিন্ন অংশে ঘন কুয়াশার কারণে নৌযান চলাচলও সাময়িকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যমুনা বহুমুখী সেতু এলাকায় কুয়াশার ঘনত্ব বেশি থাকায় ইঞ্জিনচালিত নৌকাগুলোকে ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা গেছে।
কুয়াশা ও প্রচণ্ড ঠান্ডায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ ও কৃষিশ্রমিকরা। বোরো ধানের চারা রোপণ ও সবজি ক্ষেতের পরিচর্যায় শ্রমিকদের চরম কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। কৃষি বিভাগ কুয়াশাজনিত রোগবালাই থেকে ফসল রক্ষায় কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে।
যমুনা সেতু পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানি জানান, অতিরিক্ত কুয়াশা থাকলেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করছে এবং দুর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
টাঙ্গাইল আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক জামাল উদ্দিন জানান, শুক্রবার টাঙ্গাইলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি বলেন, আগামী কয়েকদিন কুয়াশা ও শীতের এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও কমার আশঙ্কা রয়েছে। শীত ও কুয়াশাজনিত দুর্ঘটনা এড়াতে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
১১৮ বার পড়া হয়েছে