খালেদা জিয়ার অবস্থার উন্নতি, কথাবার্তায় সাড়াও দিয়েছেন
সোমবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩:০১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে।
হাসপাতালের চিকিৎসক ও দলীয় দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, রবিবার তিনি বিছানায় অল্প নড়েচড়ে সাড়া দিতে পেরেছেন। তবে তাঁরা সতর্ক করে বলেছেন-উন্নতি হলেও তিনি এখনও ঝুঁকিমুক্ত নন।
চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা তাঁর চিকিৎসায় যুক্ত রয়েছেন। কিডনির জটিলতা, লিভারজনিত সমস্যা, শ্বাসকষ্ট ও শরীরে পানি জমাসহ একাধিক শারীরিক সংকট একযোগে থাকায় পুরো চিকিৎসাপ্রক্রিয়া অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে চালানো হচ্ছে। অবনতি দেখা দেওয়ায় কয়েক দিন ধরে তাঁকে আইসিইউ সমমানের হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে রাখা হয়েছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনাও চলছে। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ ফ্লাইট ও পরিবেশগত পরিবর্তন বর্তমানে তাঁর জন্য বড় ঝুঁকি হতে পারে। তাই এখনই বিদেশে নেওয়ার মতো স্থিতিশীল অবস্থায় তিনি পৌঁছাননি। চিকিৎসকদের মূল লক্ষ্য-দেশেই তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল করা।
রবিবারও তাঁর কিডনির ডায়ালাইসিস করা হয়েছে। এখনো স্বাভাবিক খাবার গ্রহণের মতো অবস্থায় পৌঁছাননি বলে জানা গেছে।
এদিকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও বিএনপি নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, রোগী চিকিৎসা সাড়া দিচ্ছেন। চিকিৎসকেরা চেষ্টা করছেন কত দ্রুত তাঁর শারীরিক সক্ষমতা এমন পর্যায়ে নেওয়া যায়, যাতে প্রয়োজনে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে স্থানান্তর করা সম্ভব হয়। তবে এ মুহূর্তে সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
পরিবারের প্রধান মনোযোগও বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার দিকে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জুবাইদা রহমান বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
দলের নেতারা নিয়মিত খালেদা জিয়ার খোঁজ নিচ্ছেন। তবে হাসপাতালের সামনে নেতা-কর্মীদের ভিড় এড়াতে দল থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিকে, বিজয়ের মাসকে কেন্দ্র করে ১ ডিসেম্বর থেকে ‘বিজয় মশাল রোড শো’ কর্মসূচি শুরু করার কথা ছিল বিএনপির। তবে খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণে তা স্থগিত করেছে দলটি।
রবিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি জানান, চরম অসুস্থ অবস্থায় দলের চেয়ারপারসন হাসপাতালের শয্যায় জীবন–সংগ্রামে রয়েছেন; তাই কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়েছে।
রিজভী বলেন, শুধু বিএনপি নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষও খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছেন।
বিজয় দিবস উপলক্ষে ঘোষিত পক্ষকালব্যাপী কর্মসূচি চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে শুরু হয়ে ১৬ ডিসেম্বর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মহাসমাবেশের মাধ্যমে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঘোষণার একদিনের মধ্যেই তা স্থগিত করল দলটি।
২৩ নভেম্বর রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা–নিরীক্ষায় খালেদা জিয়ার ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর একের পর এক জটিলতা বৃদ্ধি পাওয়ায় তাঁকে উন্নত পরিচর্যায় রাখা হয়েছে। বিদেশে নেওয়ার মতো স্থিতিশীলতা এখনো আসেনি বলেও পুনর্ব্যক্ত করেন রিজভী।
১১৫ বার পড়া হয়েছে