খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উদ্ঘাটন, পরকীয়ার জেরেই হত্যাকাণ্ড
শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫ ৪:০৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকার জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের পাশ থেকে ড্রামে করে ব্যবসায়ী আশরাফুল হকের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরকীয়া সম্পর্ককে কেন্দ্র করেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ ও র্যাব।
গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে দুটি নীল রঙের ড্রাম থেকে ২৬ টুকরো করা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রংপুরের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে শনাক্ত করা হয় ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে।
পুলিশ জানায়, নিহত আশরাফুল ও মালয়েশিয়া প্রবাসী জরেজুল একই এলাকার বন্ধু। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয় হওয়া কুমিল্লার দাউদকান্দির এক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান জরেজুল। দেশে আসার পর ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও করেন তিনি।
পরবর্তীতে জরেজুল বিদেশে ফিরে গেলে সেই নারী আশরাফুলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। দেশে ফিরে বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন জরেজুল। রাজধানীর শনির আখড়ায় ভাড়া বাসায় গিয়ে তিনি আশরাফুল ও তার প্রেমিকাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে আশরাফুলকে হত্যা করেন। পরে বালিশ চাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
হত্যার পর ২৪ ঘণ্টা মরদেহ ঘরে রেখে কী করবেন বুঝতে না পেরে দুজন মরদেহ ২৬ টুকরায় কাটেন। পরে দুটি ড্রামে ভরে সিএনজি অটোরিকশায় করে ঘুরতে ঘুরতে হাইকোর্ট এলাকার মাজার গেটের কাছে ড্রাম ফেলে পালিয়ে যান।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ৪৩ মিনিটে ওই নারী শনির আখড়ার বাসায় পৌঁছান। পাঁচ মিনিটের মধ্যে তিনি ও জরেজুল দুটি ড্রামসহ সিএনজি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে হাইকোর্টের সামনে ড্রাম দুটি রেখে দ্রুত সটকে পড়েন তারা।
হত্যার পর দুজন কুমিল্লার দাউদকান্দিতে পালিয়ে গিয়ে আলাদা হয়ে লুকানোর চেষ্টা করেন। পরে অভিযান চালিয়ে জরেজুলকে গ্রেফতার করে ডিএমপি, তার কাছে পাওয়া যায় হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি। অপরদিকে নারীকে গ্রেফতার করে র্যাব, যারা বাকি আলামতও উদ্ধার করে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, পরকীয়ার জেরেই এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে, যা পূর্বপরিকল্পিত না হলেও ঘটনার পর মরদেহ গুমের চেষ্টা ছিল সুস্পষ্ট।
১৩৯ বার পড়া হয়েছে