সর্বশেষ

মতামত

মসজিদে রাজনৈতিক বক্তব্য: নিষেধ করায় বিএনপি নেতা লাঞ্ছিত

মনজুর এহসান চৌধুরী
মনজুর এহসান চৌধুরী

সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫ ৪:৪২ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের বরিয়া জামে মসজিদে গতকাল শনিবার আসরের নামাজের পর ইসলামী বক্তা ও নির্বাচনী প্রার্থী মুফতি আমীর হামজার উপস্থিতিতে এক বিতর্কিত ঘটনা ঘটে।

জামায়াতে ইসলামীর কুষ্টিয়া সদর আসনের এই মনোনীত প্রার্থী ধর্মীয় আলোচনার পাশাপাশি রাজনৈতিক বক্তব্য শুরু করলে মসজিদ কমিটির সভাপতি এবং বটতৈল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহজাহান আলী ধর্মীয় পরিবেশ বজায় রাখার অনুরোধে তাঁর রাজনৈতিক বক্তব্যকে নিষিদ্ধ করেন। তিনি স্পষ্টতই বলেন, “আপনি ধর্মীয় আলোচনা করুন; রাজনৈতিক বক্তব্য এখানে নিষিদ্ধ।”

উত্তেজনা ও লাঞ্ছনার পরিবেশ
শাহজাহান আলীর অনুরোধে মসজিদে উপস্থিত বেশ কয়েকজন জামায়াত-সমর্থক মুসল্লি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। প্রতিবাদে তারা শাহজাহান আলীর দিকে এগিয়ে যান এবং তাঁকে ধাক্কা দিয়ে মসজিদের বাইরে বের করে দেন। সেখানেই তাঁকে মৌখিকভাবে অপমানও করা হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। পরিস্থিতি শিথিল করতে কয়েকজন মুসল্লি উদ্যোগী হলেও, ঘটনাস্থলে চরম চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এবং এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

সভাপতির দায়িত্ব ও প্রতিক্রিয়া
শাহজাহান আলী জানিয়েছেন, মসজিদ কমিটির সভাপতি হিসেবে তিনি মসজিদের ধর্মীয় পরিবেশকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে চেয়েছেন, তাই শুধুমাত্র রাজনৈতিক বক্তৃতাকে বিরত থাকতে বলেছিলেন। তিনি আমীর হামজাকে উপস্থিতি বা ধর্মীয় আলোচনা করতে বাধা দেননি, শুধুমাত্র রাজনৈতিক বক্তব্য বন্ধের অনুরোধ করেন।

সমঝোতা ও স্থানীয় প্রতিক্রিয়া
জেলা জামায়াতে ইসলামী নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, ঘটনাটি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল; আমীর হামজা পরে শাহজাহান আলীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং বোঝাপড়া শেষে তাঁরা করমর্দনের মাধ্যমে বিদায় নেন। স্থানীয় মুসল্লি ও কমিউনিটি সদস্যরা ভবিষ্যতে মসজিদে শুধুমাত্র ধর্মীয় আলোচনা রাখার অনুরোধ করেছেন।

আইন ও ধর্মীয় মূল্যবোধ
বাংলাদেশে মসজিদকে ধর্মীয় ও সামাজিক ঐক্যের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়; রাজনৈতিক আলোচনা ধর্মীয় পরিবেশের পরিপন্থী বলে বেশিরভাগ ধর্মীয় নেতা ও সাধারণ মুসল্লিদের মত. সভাপতির নিষেধাজ্ঞা ধর্মীয় কর্তব্যের অংশ, কোনো ব্যক্তিগত বা আইনগত অপরাধ নয়।

শেষ কথা
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বরিয়া মসজিদে ধর্মীয় পরিবেশ ও রাজনৈতিক বিভাজন—দুইয়ের সংঘাতীয় চিত্র স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। মসজিদের সভাপতি শাহজাহান আলী তার দায়িত্ব পালন করেছেন, যদিও রাজনৈতিক উত্তেজনায় তিনি লাঞ্ছিত হয়েছেন।

লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট। 

১৩০ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
মতামত নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন