সর্বশেষ

সারাদেশ

কুষ্টিয়ায় সিভিল সার্জন অফিসের নিয়োগে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ৪:০১ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
কুষ্টিয়ায় সিভিল সার্জন অফিসের নিয়োগ পরীক্ষা ঘিরে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষার আগের রাতেই ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মোহাম্মদ হোসেন ইমামের নিজ বাসায় বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে নির্দিষ্ট প্রার্থীদের ‘প্রশিক্ষণমূলক পরীক্ষা’ নেওয়া হয়। এ সময়ের ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্র সাংবাদিকদের হাতে এসেছে, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি “টক অফ দ্য টাউন”-এ পরিণত হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) গভীর রাতে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন চাকরি প্রার্থীকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে আনা হয় ওই আরএমও’র কালিশংকপুর এলাকার বাসায়। সেখানে সারারাত চলে পরীক্ষার প্রস্তুতির নামে প্রশ্ন মুখস্থের আয়োজন।

 

পরদিন সকালেই ওই পরীক্ষার্থীরা অংশ নেন সিভিল সার্জন অফিসের নিয়োগ পরীক্ষায়। স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে কয়েকজন পরীক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে বের হতে দেখা যায়। হাতে ফাইল নিয়ে দ্রুত পায়ে হেঁটে বা দৌড়ে তারা পরীক্ষা কেন্দ্রে চলে যান। এ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে উপস্থিত সাংবাদিকরা।

 

পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, যারা অর্থ দিয়েছেন, তারাই আগেভাগে প্রশ্নপত্র পেয়েছেন। ভেড়ামারা থেকে আসা এক পরীক্ষার্থীর আত্মীয় জানান, “রাতে অ্যাম্বুলেন্সে করে ক্লিনিকে নেওয়া হয়, সেখানে প্রশ্ন দেখানো হয় এবং মোবাইল কেড়ে রেখে মুখস্থ করতে বলা হয়।”

আরএমও ডা. হোসেন ইমাম অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, “আমার বাসায় নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ভাড়া থাকে। তাদের দেখা নিয়ে অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছেন। নিয়োগ পরীক্ষার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।”

 

সাংবাদিক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ডা. হোসেন ইমামের ভাই ও কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা হাসান ইমাম নান্নু এই সবকিছুর আয়োজন করে চাকরি প্রার্থীদের যোগাড় করো নিয়ে আসে।

এই ঘটনায় জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরিফিন বলেন, “আরএমও কোনোভাবেই নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ নন। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তার বাড়িতে এমন ঘটনার অভিযোগ উদ্বেগজনক। বিষয়টি খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালককে জানানো হয়েছে এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে তদন্তের জন্য।”

 

এদিকে, কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসের নিয়োগ (স্বাস্থ্য সহকারী ৯৭ জনসহ ৭ পদের মোট ১১৫ জন) ঘিরে প্রশাসনের একাংশের যোগসাজশের অভিযোগও উঠেছে। জেলা প্রশাসক অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতেই নিয়োগ দেওয়া হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই।”

 

এই ঘটনাটি শুধু কুষ্টিয়ার নয়, বরং সারাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের প্রতিযোগিতায় “অর্থ বনাম মেধা”-র লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রশাসন যদি এবারও দায়ীদের আড়াল করে, তবে যোগ্য তরুণ সমাজের আস্থা চিরতরে হারিয়ে যাবে।

১৩১ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন