নারায়ণগঞ্জে ৩৭৩ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১০:২২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
নারায়ণগঞ্জের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে চরম শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার মোট ৫৪৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৭৩টিতেই নেই প্রধান শিক্ষক।
এছাড়া ৮৭টি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকরা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রধান শিক্ষকের কাজ সামলাচ্ছেন।
এ অবস্থায় বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি প্রশাসনিক কাজেও সৃষ্টি হয়েছে বিশৃঙ্খলা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে অভিভাবক মহল এবং উদ্বেগ জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার ১২০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৯টি, বন্দর উপজেলায় ৪৪টি, সোনারগাঁয়ে ৬৩টি, আড়াইহাজারে ৯৬টি এবং রূপগঞ্জে ৪৪টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। পাশাপাশি সহকারী শিক্ষকের ১১৯টি পদও ফাঁকা রয়েছে।
শিক্ষক সংকটের ফলে বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। সহকারী শিক্ষকরা একদিকে পাঠদান, অন্যদিকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে হিমশিম খাচ্ছেন।
সোনারগাঁ উপজেলার ৪৯নং বাড়ীমজলিশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফয়েজ আহমদ বলেন, “প্রধান শিক্ষক না থাকায় একাডেমিক ও প্রশাসনিক সব কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের ওপর।”
৬৭নং ভবনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হারুন অর রশিদ বলেন, “সহকারী শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করা খুবই কঠিন। কোনো কাজই ঠিকভাবে সম্পন্ন করা যাচ্ছে না।”
এমনকি দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেও কোনো প্রশাসনিক ক্ষমতা না থাকায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতা তৈরি হচ্ছে বলে জানান ৬৬নং হাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কাউসার আহমেদ।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌসী বেগম বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ থাকায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। বিষয়টি ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে এবং দ্রুত পদগুলো পূরণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।”
স্থানীয়রা মনে করছেন, দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে জেলার প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থার ওপর এর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
১২২ বার পড়া হয়েছে