কোন কোন জায়গা নিয়ে ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ প্রতিষ্ঠা চায় নেতানিয়াহু

রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫ ৩:৫২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তিনি ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ প্রতিষ্ঠার পক্ষে।
আই ২৪ নিউজের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থাপক শ্যারন গালের হাতে একটি ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ মানচিত্র সংবলিত অ্যামুলেট গ্রহণ করে নেতানিয়াহু বলেন, “খুব করেই চাই” এমন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হোক।
এই মন্তব্যে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কারণ, তথাকথিত ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ ধারণায় শুধু বর্তমান ইসরায়েলই নয়, বরং ফিলিস্তিনের সমস্ত অঞ্চল, মিশর ও জর্ডানের কিছু অংশ, সিরিয়া ও লেবাননের বিস্তৃত এলাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু আরও বলেন, “আমি একটি ঐতিহাসিক এবং ঐশ্বরিক মিশনে রয়েছি। ইহুদিরা বহু প্রজন্ম ধরে এই ভূমিতে ফিরে আসার স্বপ্ন দেখে এসেছে। আমরাও সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছি, এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও এই স্বপ্ন বহন করবে।”
টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ ধারণাটি মূলত ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধের সময় ইসরায়েলের দখলকৃত নতুন অঞ্চলগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে গঠিত হয়। এর মধ্যে পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, সিনাই উপদ্বীপ এবং গোলান মালভূমি অন্তর্ভুক্ত।
লিকুদ পার্টির আদিপুরুষ ও নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক আদর্শের পথপ্রদর্শক জে’ইভ জাবোটিনস্কি সহ অনেক প্রাথমিক জায়নবাদী নেতা এই বৃহৎ ভৌগোলিক কাঠামোর পক্ষে ছিলেন।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ইসরায়েলি লেখক আভি লিপকিন এক আলোচিত সাক্ষাৎকারে বলেন, “একদিন আসবে যখন আমাদের সীমানা হবে লেবানন থেকে সৌদি আরবের মরুভূমি পর্যন্ত, ভূমধ্যসাগর থেকে ইরাকের ফোরাত নদী পর্যন্ত বিস্তৃত।” তিনি আরও বলেন, “আমরা একদিন মক্কা, মদিনা ও সিনাই দখল করব এবং সেগুলোকে ‘শুদ্ধ’ করব।”
তবে এই ধরনের চরমপন্থী বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এর আগে, ইসরায়েলের বর্তমান অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোৎরিচও একাধিকবার বলেছেন, তারা ইসরায়েলের ভৌগোলিক সীমানা দামেস্ক পর্যন্ত বিস্তৃত করতে চান। বিশ্লেষকরা বলছেন, নেতানিয়াহু এবং তাঁর মিত্রদের এমন বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যে আরও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে ফিলিস্তিন ও প্রতিবেশী আরব রাষ্ট্রগুলোর জন্য এটি একটি উদ্বেগজনক বার্তা।
১৮৯ বার পড়া হয়েছে