সর্বশেষ

আইন-আদালত

'পঙ্গু'র রোগীর উদ্দেশ্যে ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’ নির্দেশ দিয়ে যায় শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

সোমবার, ৪ আগস্ট, ২০২৫ ৮:৩৪ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
জুলাই গণ-আন্দোলনের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন আহত শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান।

আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১–এ মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে এই জবানবন্দি দেন তিনি।

জবানবন্দিতে ইমরান জানান, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই ঢাকার বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকায় আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। তাঁর বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচে গুলি লাগে। এরপর তাঁকে চিকিৎসার জন্য আগারগাঁওয়ে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।

সাক্ষ্যে ইমরান বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ বা ২৭ জুলাই সকালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন। তিনি ইমরানের সঙ্গে কথা বলেন এবং আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চান। ইমরানের দাবি, শেখ হাসিনা তখন বুঝতে পারেন তিনি একজন আন্দোলনকারী। এর কিছুক্ষণ পর শেখ হাসিনা হাসপাতালের হেল্প ডেস্কে গিয়ে “নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ” বলে নির্দেশ দেন—যা ইমরান নিজ কানে শুনেছেন বলে জানান।

ইমরান বলেন, সে সময় তিনি এই মন্তব্যের তাৎপর্য বুঝতে পারেননি। কিন্তু পরে দেখতে পান, তাঁর অস্ত্রোপচার বিলম্বিত হচ্ছে, প্রয়োজনীয় ওষুধও বাইরে থেকে কিনে দেওয়া হচ্ছে না, এমনকি তাঁর বাবাও তাঁকে হাসপাতাল থেকে নিতে পারছিলেন না। তিনি বলেন, “একপর্যায়ে বুঝতে পারি, এই নির্দেশের মানে কী—চিকিৎসা না দিয়ে আমাকে আটকে রাখা এবং পরে আমার পা কেটে কারাগারে পাঠানো।”

তিনি এই ঘটনার জন্য সরাসরি শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দায়ী করেন।

এর আগের দিন, রোববার মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন একজন মাইক্রোবাসচালক, খোকন চন্দ্র বর্মণ।

এ মামলার একমাত্র গ্রেপ্তারকৃত আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ইতোমধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধে নিজের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করেছেন এবং রাষ্ট্রপক্ষের স্বাক্ষী হিসেবে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে সাক্ষ্য দিতে সম্মত হয়েছেন। তাঁকে আদালতে হাজির করা হয় এবং বিচার কার্যক্রমের অংশ বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান পলাতক থাকায়, আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী তাঁদের নামে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ ও অভিযোগ গঠনের পর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

জুলাই ও আগস্ট ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এক বছর পর এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হলো।

১৩৪ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
আইন-আদালত নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন